http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=75830
|
অবগুণ্ঠন উন্মোচন: আসিফ আরসালান
অতীতের কোনো সামরিক অভ্যুত্থানের সাথে জামায়াতের সম্পর্ক ছিলো না: এবারেও নাই
ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সাথে জামায়াতে ইসলামীকে জড়িত করার জন্য একটি মুখচেনা মহল আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। তাদেরকে সক্রিয়ভাবে মদদ জুগিয়েছে ভারতের ঐ মুসলিম বিরোধী কায়েমী চক্র। সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে গত ১৯ জানুয়ারী সেই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের কথা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তারপর ৯ দিন পার হয়ে গেছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা বা কর্মীকেও জড়িত করা সম্ভব হয় নাই। ধর্মান্ধ বললেই যদি জামায়াতে ইসলামীকে জড়িত করার ষড়যন্ত্র করা হয় তাহলে সেটা হয় অনেকটা সেই অবস্থার মতো, যেখানে বলা হয়, 'আন্ধার ঘরে সাপ, সারা ঘরে সাপ'। ১৯ তারিখের সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছে যে কতিপয় প্রবাসী বাঙ্গালী এবং দেশে একটি ধর্মান্ধ গোষ্ঠী এই ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জড়িত ছিলো। আর যায় কোথায়। রবীন্দ্রনাথের কবিতার সেই লাইনের মতো ''রাজা যাহা বলে/পারিষদ দল বলে তার শতগুণ''। ওরা চিৎকার শুরু করে দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী নাকি এটি উস্কে দিয়েছে। ওরা বললেন ধর্মান্ধ, আর 'জনকণ্ঠ' চক্র পারিষদ দলের মতো চিৎকার জুড়ে দিলো, ওরা সব জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু আসল চিত্রটি কি?
বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে এ পর্যন্ত যে সব বেসামরিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা নাকি একটি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতা বা কর্মী। খোদ সামরিক বাহিনী বা পুলিশ বিভাগ থেকে আটক ব্যক্তিদের একজনকেও জামায়াত কর্মী বলে উল্লেখ করা হয় নাই। যেসব মিলিটারী অফিসারের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী যার নাম শোনা যাচ্ছে তিনি হলেন মেজর জিয়াউল হক। বলা হচ্ছে যে, তিনি নাকি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন 'হিজবুত তাহ্রীরের' সাথে সংশ্লিষ্ট। তাকে আকারে ইঙ্গিতে কোনোভাবেই জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংশ্লিষ্ট বলে বলা হয় নাই। আরেকজন সিনিয়র অফিসারকে লগ এরিয়ার সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। তিনি হলেন- মেজর জেনারেল কামারুজ্জামান। তিনি ছিলেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের জি ও সি। অর্থাৎ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের প্রধান। জেনারেল কামারুজ্জামান এস এস সি এবং এইচ এস সি উভয় পরীক্ষাতেই সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। তিনি সোর্ড অব অনার প্রাপ্ত অফিসার। বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমীতে অসাধারণ সাফল্যের জন্য তাকে একাডেমিক গোল্ড মেডেল দেয়া হয়। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ডিভিশন বলে পরিচিত সাভারের নবম ডিভিশনের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ব্রিগেড বলে পরিচিত ৪৬ নম্বর ব্রিগেডের কমান্ডিং অফিসার হিসাবে কাজ করেন। সেটি ছিলো কেয়ারটেকার সরকারের আমল। শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই তিনি ব্রিগেডিয়ার থেকে প্রমোশন পেয়ে মেজর জেনারেল হন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই তিনি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের অধিনায়ক হন। পত্রিকান্তরের রিপোর্ট মোতাবেক তিনি নাকি ব্রিগেডিয়ার জেনারেলদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতম। ব্যর্থ অভ্যুত্থানে ভাগ্য বিপর্যয় না ঘটলে হয়ত তার নাম ভবিষ্যতে লে. জেনারেলদের তালিকায় উঠত। লগ এরিয়ায় সংযুক্ত হয়েছেন আরেকজন অফিসার। নাম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তরিকুল আলম। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তরিকুল আলম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের মিলিটারী সেক্রেটারি ছিলেন। আরেকজন মেজর জেনারেল হলেন শেখ মুনির। তার চাকরি নাকি বিদেশ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে। বিগত কেয়ারটেকার সরকারের আমলে তিনি ছিলেন শক্তিশালী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স বা এসএসএফ-এর মহাপরিচালক।
লে. কর্নেল এহসান ইউসূফকেও আটক করা হয়েছে। তিনি মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুরের আপন ভাগ্নে এবং মেজর মাহবুবের আপন ভাই। ১৯৮১ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জিয়া চট্টগ্রামে গেলে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের অধিনায়ক মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুর সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, প্রেসিডেন্ট জিয়া চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে নিহত হয়েছেন। পহেলা জুন চট্টগ্রাম বেতার থেকে তিনি অর্থাৎ জেনারেল আবুল মঞ্জুর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখন সেনা প্রধান ছিলেন জেনারেল এরশাদ। জেনারেল এরশাদ জেনারেল মঞ্জুরের অভ্যুত্থানকে বিদ্রোহ বলে আখ্যায়িত করেন এবং বিদ্রোহ দমনের জন্য সরকারের প্রতি অনুগত সৈন্যদের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের পর জেনারেল মঞ্জুর পালিয়ে যাচ্ছিলেন। পলায়ন পর জেনারেলকে আটক করা হয় এবং বন্দী অবস্থায় জেনারেল মঞ্জুর নিহত হন। লে. কর্নেল এহসান ইউসূফ জেনারেল আবুল মঞ্জুরের আপন ভাগ্নে।
\ দুই \
লে. কর্নেল ইউসূফ লে. কর্নেল মাহ্বুবুর রহমানের আপন ভাই। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডে জে. মঞ্জুরের যে দুই জন প্রধান সহযোগী ছিলেন তাদের একজন হলেন লে. কর্নেল মাহ্বুবুর রহমান। আরেকজন হলেন লে. কর্নেল মতিউর রহমান। কর্নেল মাহবুব সম্পর্কে ১৯৯৫ সালের ২৯ এপ্রিল দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত নিবন্ধের এক স্থানে বলা হয়, ''মেজর জেনারেল মঞ্জুর সম্ভাব্য এক সেনাবিদ্রোহ এবং রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন অপর দুই সেনা অফিসার লে. কর্নেল মতিউর রহমান ও লে. কর্নেল মাহ্বুবুর রহমানের সহযোগিতায়। লে. কর্নেল মাহ্বুবুর রহমান মেজর জেনারেল মঞ্জুরের ভাগ্নে। সেনা বিদ্রোহ ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরও যারা সহযোগিতা করেন তাদের মধ্যে ছিলেন লে. কর্নেল দেলোয়ার হোসেন ও মেজর খালেদ। বলপূর্বক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য সেনাবিদ্রোহ সংঘটিত করা এবং রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করার উপরোক্ত ষড়যন্ত্রকারীরা পরিকল্পনা করেছিলেন''। (জনকণ্ঠ-২৯/০৪/১৯৯৫: রাষ্ট্রপতি জিয়া ও জে. মঞ্জুরের হত্যাকান্ড এবং তারপর)। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে মৃত লে. কর্নেল মাহবুবুর রহমান এবং এহসান ইউসূফ আপন ভাই।
জিয়া হত্যার পর লে. কর্নেল মাহবুবের মৃত্যুদন্ড হয়। ২০০৯ সালের ৫ মার্চ মেজর পদে থাকা অবস্থায় লে. কর্নেল (অব.) এহসান ইউসূফকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। পরবর্তীকালে তাকে অবসর দানের বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করা হয় এবং তার অবসর প্রদানের নির্দেশটি বাতিল করা হয়। শুধু তাই নয়, তাকে এই শেখ হাসিনার সরকারই মেজর থেকে লে. কর্নেল পদে ভূতাপেক্ষ প্রমোশন দেয়।
ওপরে গ্রেফতারকৃত যেসব অফিসারের কথা বলা হলো তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস কি সেটি দেশবাসী জানে না। জানা সম্ভবও নয়। তারা এই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত ছিলেন কিনা সেটিও সাধারণ মানুষ জানে না। সেটি জানেন সেনা কর্তৃপক্ষ। তবে একটি বিষয় প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে তারা আর যাই হোক না কেন জামায়াতে ইসলামীর সাথে কোনো ভাবেই জড়িত নন। অথচ তারপরেও এই ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জামায়াতে ইসলামীকে জড়ানো হচ্ছে।
\ তিন \
এবার আসা যাক বেসামরিক নাগরিক ইশরাক আহমদ সম্পর্কে। ১৯ জানুয়ারী সেনাবাহিনীর সংবাদ সম্মেলনে কতিপয় সামরিক অফিসারের সাথে যে বেসরকারী ব্যক্তিটির নাম বার বার উঠে আসছে তিনি একজন প্রবাসী বাঙ্গালী। বলা হয়েছে যে তিনি বিদেশে ব্যবসা করেন। বসবাস করেন সম্ভবত হংকংয়ে। তাকেও ধর্মান্ধ বলা হয়েছে। ইশরাক সম্পর্কে এখন যেসব তথ্য খবরের পাতায় প্রকাশিত হয়েছে সেই সব তথ্যে দেখা যায় যে ইশরাক আওয়ামী ঘরানার বর্ণনা মোতাবেক ধর্মান্ধ তো নয়ই, তিনি বরং ধর্মনিরপেক্ষ এবং চিন্তাধারায় বামপন্থী। লন্ডনের বহুল প্রচারিত 'ইকোনমিস্ট' পত্রিকায় তিনি একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
গত শুক্রবার ঢাকার একটি বাংলা দৈনিকে ঐ সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ প্রকাশিত হয়েছে। লন্ডনের ইকোনমিস্টকে তিনি বলেছেন, ''তিনি ধর্মান্ধ মৌলবাদী নন। ধর্মীয় মৌলবাদের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ব্যর্থ সেনা অভিযানে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আমার বন্ধু রয়েছেন। তিনি বলেন, তার বাড়ি থেকে মদ, ব্র্যান্ডি এবং হুইস্কি জব্দ করা হয়েছে। কোনো ধরনের অস্ত্র নয়। সরকার সেনা অভ্যুত্থানের কথা বললেও কোনো ট্রুপস ও গান মুভমেন্ট দেখাতে পারেনি।
ইকোনমিস্টের ওই প্রতিবেদনে ইশরাক আহমেদকে উদার পরিবারের উচ্চপদস্থ সাবেক কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, ইশরাক তাদের জানিয়েছেন তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ইশরাক ইকোনমিস্টকে আরও জানিয়েছেন, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা প্রায় দুই বছর থেকে বাংলাদেশী গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে অফিস করছেন এবং সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থাও কার্যকর রয়েছে। প্রতিবেদনে প্রধানন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর বরাত দিয়ে বলা হয়. ড. রিজভী জানিয়েছেন, ভারতীয়দের বাংলাদেশে এ জাতীয় উপস্থিতির ব্যাপারে তিনি ওয়াকিবহাল নন।
গত ২৬ জানুয়ারী ইশরাক আহমদ সম্পর্কে 'ডেইলী স্টারে' একটি তথ্য নির্ভর রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ১৯৭১ সালের ইশরাক অস্ত্র ধারন করেন এবং তাঁর বিশ্বাস থেকে তিনি কোনোদিন পিছু হটেননি। ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রেসিডেন্ট শাহরিয়ার কবির বলেন যে ইশরাক নিঃসন্দেহে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলো। তবে তিনি তাকে বেয়াদব বলে অভিহিত করেছেন। কারণ ইশরাক নাকি জাহানারা ইমামের সামনে যখন তখন সিগারেট খেতেন। ইশরাকের পিতা ডেইলী স্টারকে জানিয়েছেন যে, ১৯৬৯ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় তার পুত্র সম্মিলিত মেধা তালিকায় কুমিল্লা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে ভর্তি হওয়ার পর তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন এবং ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইশরাক মাস্টার্স কমপ্লিট করেন এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ ব্যবসা শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পর তিনি বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। একই সাথে তিনি মুক্তিযুদ্ধ কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ইশরাকের সম্পর্কে পত্র-পত্রিকায় যে সব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে সে সব তথ্য জানার পর একজন সাধারণ মানুষও বলবেন যে ইশরাক আর যাই ছিলেন না কেন তিনি জামায়াতে ইসলামী বা ইসলামী ঘরানার কেউ ছিলেন না।
\ চার \
একটি কথা পরিষ্কার করে বলা দরকার। দেশে যতোগুলো সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে তার একটির সাথেও জামায়াতে ইসলামী জড়িত ছিলো না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর কোনো অস্তিত্ব ছিলো না, কারণ জামায়াত তখন নিষিদ্ধ ছিলো। তাই ৭৫ সালের আগস্ট অভ্যুত্থানের সাথে জামায়াতের সম্পৃক্ততার প্রশ্নই ওঠে না। তখন বিএনপি'র জন্মই হয়নি। ৩ নবেম্বরের অভ্যুত্থানের নায়ক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ও কর্নেল শাফায়াত জামিল। এরা দু'জনেই ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থক। খালেদ মোশাররফের আপন ভাই রাশেদ মোশাররফ ও তার মাতা ৩ রা নভেম্বরের অভ্যুত্থানের সমর্থনে ঢাকার রাজপথে মিছিল করেছিলেন। রাশেদ মোশাররফ আওয়ামী লীগের টিকেটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৭ ই নবেম্বরের বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন দেশের আপামর সিপাহী ও জনতা। এটির সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা ছিলো না। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে একদিন স্থায়ী একটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিলেন জেনারেল আবুল মঞ্জুর। জামায়াতে ইসলামীর সাথে তার সম্পৃক্ততার প্রশ্নই ওঠে না। ১৯৮২ সালের ২৪ শে মার্চ গভীর রাতে জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বে যে সামরিক অভ্যুত্থান হয় সেটিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ ফজলুল হক মনির পত্রিকা 'বাংলার বাণী'। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল মোহাম্মদ নাসিম অভ্যুত্থান ঘটানোর অপচেষ্টা করেন। সেই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানান শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। কিন্তু সেনা বাহিনীর দেশ প্রেমিক সদস্যরা সেই অভ্যূত্থানকে নস্যাৎ করে দেয়।
ওপরের এই বিবরণ থেকে দেখা যাচ্ছে যে, দেশের কোনো সামরিক অভ্যুত্থানের সাথে জামায়াতে ইসলামীর দূরতম সম্পর্কও ছিলো না। এবারের ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার ধারে পাশেও জামায়াত ছিলো না।
__._,_.___