Banner Advertiser

Wednesday, July 18, 2012

[mukto-mona]



                                     স্বভাব আমার স্বাভাবিক



বাবা মায়ের বোকামির সৌজন্যে এত্ত সুন্দর পৃথিবীতে আসার সৌভাগ্য হয়েছে।জন্মসূত্রে পেয়েছি একজোড়া চোখ,কান,বোঁচা একটা নাক,ফ্রিতে পেয়েছি প্রমাণ সাইজের একটা মস্তিষ্ক,সঙ্গে আনুষঙ্গিক আরও অনেক অনেক কিছু।আমি স্বাভাবিক মানুষ।যে কেও আমাকে নিঃসঙ্কোচে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে মেনে নেবে,মেনে নেয়,এত্তদিন নিয়েছে । শরীরে কিংবা মনে,আমার কোথাও অস্বাভাবিকতার কোন ছায়া নেই।অথচ দিন দুয়েক ধরে চোখ বন্ধ করার সাথে সাথে কই থেকে এক আহাম্মক স্বপ্নে এসে চিৎকার করে বলতেছে "তুই যে স্বাভাবিক,প্রমাণ কর!!!"নে,সামলা ঠ্যালা!!!আমি পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রমাণ করছি,F=ma,E=mc2 প্রমাণ করছি,বাংলাদেশের ষড়ঋতু অসাধারন সুন্দর বাংলা রচনায় এইটাও প্রমাণ করছি অনেকবার,প্রমাণ করতে পারছি কারন বইয়ে এইগুলো খুব সুন্দর করে প্রমাণ করে দেয়া ছিল।আর বলদ আমারে কোন বই না দিয়াই কয় আমি স্বাভাবিক,এইটা প্রমাণ করতে!!!আর গাধা,এটাও জানেনা যে স্বাভাবিকদের কিচ্ছু প্রমাণ করতে হয়না,স্বাভাবিকরা আজন্ম প্রমাণিত।প্রমাণ করবার দায়িত্ব অসাধারণদের,ইরাকে অস্ত্রের খনি প্রমাণ করবার দায়িত্ব ওবাবা(ওবামা)র,দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য শেয়ার বাজার ধ্বসের প্রয়োজন ছিল প্রমাণ করবার দায়িত্ব ধন(!!!)মন্ত্রীর,মাঠে নামবার আগে একটা চোখ টিপ দিলেই(সর্বোচ্চ ১০ মিটার দূরত্ব থেকে!!!) নাকি পাকিস্তানীরা একটা ক্যাচ ফেলে দেয়,ক্যানাডায় নাকি ভিখারি সবচেয়ে কম এইসব প্রমাণের দায়িত্বও তো সিএনএন-বিবিসির দখলে;এত্ত সব যোগ্য মানুষ চারদিকে যখন,তখন প্রমাণ নিয়ে মাথা ঘামাবার কি দরকার আমার!!!আমার দায়িত্ব প্রমাণিত সবকিছু না বুঝেও বোঝার ভান করে মুখস্ত করে(পুরোটা মুখস্ত করতে নাপারলে টুকে নিয়ে) সময়মত উগড়ে দেয়া।

 

স্বাভাবিক মানুষরা আমার মতই ধামাধরা হয়ে বেঁচে থাকে নাকি আমি স্বাভাবিক মানুষদের মত ধামা ধরে বেঁচে আছি বুঝতে পারিনা।তবে আমি যে স্বাভাবিকভাবেই বেঁচে আছি তা আমার প্রতিদিনের কাজ কর্মে খুবই স্পষ্ট।কিন্তু অনেকেই আছে যারা আমার পাশাপাশি এত্ত কাছে থেকেও আমার চেয়ে আলাদা ভাবে বেঁচে আছে,বেঁচে থাকে।মাঝে মাঝেই ভাবি ওদেরকে কি স্বাভাবিক বলা যায়???এইত আমার বন্ধু অনিকেত এর কথাই বলি।বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে,বাবা সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে বছর চারেক হল।ঢাকায় আলিশান তিনটে বাড়ি,রাস্তা কাঁপানো সুন্দর গাড়িটা(এখনকার) এই চাকরি করে কি করে হল এই বিষয়টা জানার আগ্রহ আমার ভীষণ তবে সময়ে অসময়ে অনিকেতের গাড়িতে করে এইখানে সেইখানে ঘুরতে যাওয়ার সময় কেন যেন (হয়ত আমি স্বাভাবিক বলেই) এইসব প্রশ্ন মাথায় আসেইনা।

 

আরেক বড়লোক বন্ধু রাসেল কে সবাই পছন্দ করে,একবাক্যে তাকে হিরো বলে মেনে নেয়,সবাই মেনে নিলে আমারই বা তা মেনে নিতে সমস্যা কি!!!রাসেল এয়ারকন্ডিশনড রুমে শুয়ে সমাজতন্ত্র নিয়ে ভাবে,রাসেলের গলা ফাটিয়ে চে গুয়েভেরাকে নিয়ে উচ্চবাচ্চ করে আলোচনা-সমালোচনায় তার জ্ঞানের পরিধির ব্যাপারে সবাই সম্যক ধারণা পায়,আমিও পাই।আমি চে নামের লোকটার ছবি দেখেছি,জানি না বিশেষ কিছুই,কিন্তু উনি এয়ারকন্ডিশনড রুমে থেকে,দামী গাড়ি চড়ে সমাজতন্ত্র তৈরি করেছিলেন কিনা আমার জানা নেই । তবে রাসেলের বক্তব্য আর চোখে মুখে (সমাজতান্ত্রিক!) উল্লাস দেখে চারপাশের সবাইকে রাসেলের প্রশংসায় অষ্টমুখ হতে দেখে আমিও নিমেষেই মুখে একটা বেশ গদগদ ভাব নিয়ে আসি,বিদ্রোহী হবার প্রয়োজন পাইনা(অভ্যাস ও নাই)।

 

আরেক বন্ধু শাওন বিশাল সাহিত্যিক।সাহিত্যচর্চার মত জটিল বিষয়ে তার ভয়াবহ দক্ষতা।'চর্চা' শব্দটির ব্যবহার শাওনের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যাতিক্রম।সাহিত্যচর্চার মানে শাওনের ক্ষেত্রে শুধুই সাহিত্যরচনা,অন্যের সাহিত্য পাঠ করে সময় নষ্ট করবার মত সময় তার হাতে নেই।অনেক আগে কিছু কিছু সাহিত্য সে পড়েছে,কথায় কাব্যে সেগুলোর কথাই ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে আনে।সাহিত্যিক শাওন এবং তার সাহিত্যের ভাব দেখে মনে হয়,একটা পাঞ্জাবী পড়ে সুন্দর করে কথা বলার সময় প্রতি লাইনে লাইনে সাহিত্য শব্দটা একবার উচ্চারণ করার ঠিক কায়দাটা জানতে পারলেই সাহিত্যিক হওয়া যায়;তবে হবু সাহিত্যিক ভাইরা,আপনাদের বলি সাহিত্যের ইংরেজ বানানটাও জেনে রাখা জরুরী(ইংরেজ ভালো না জানলে আজকাল আবার সুন্দরী মেয়েদের কাছে ভালো বাংলা সাহিত্যিক হওয়া যায়না)।

তবে শাওন যাই লিখুক মেয়েরা আর আমার মেয়েলি ছেলে বন্ধুরা (যারা শাওন ছাড়া আর কারো সাহিত্য কখনো পড়ছে বলে আমার মনে হয়না)'চরম হইসে,জোস হইসে' বলে চারপাশ মাথায় তুলে।আমিও আমার স্বভাবসিদ্ধ স্বাভাবিকতার গুণে ওদের সাথে সায় দেই,কখনও কখনও তাল ঠিক রেখে সবার সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে শাওনকে প্রকাশ্যে রবীন্দ্রনাথ এর উপরে তুলে নিয়ে যাই(আমি কি ওদের কাছে হেরে যেতে পারি???)

 

এরপর পরিচয় করিয়ে দেই আমার জননেতা বন্ধু শুভকে । বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিকে পরিচয়,সারাদিন পার্টি করত,বিরোধী দলে ছিল জন্য কিছুদিন ক্যাম্পাসে ওকে না দেখলেই হাসপাতালে গিয়ে দেখে আসতাম কতটা গুরুতর অবস্থা।ভালই লাগত আমার ওকে,অবাক হতাম,মানুষকেই যখন আজকাল মানুষ বেশিক্ষন সহ্য করতে পারেনা সেখানে একটা রাজনৈতিক দলের জন্য এত্ত ত্যাগ তিতিক্ষা কি করে সম্ভব!!!আজ সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে শুভও বদলে গেছে,নেতাদের সাথে মিটিং মিছিল,এখান সেখান থেকে ভাগের জিনিস টুকা(চাঁদা!!!),ছোট নেতাদের কন্ট্রোল করা;এত্ত এত্ত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় করে প্রতিদিন কাউকে না কাউকে নিজ হাতে হাসপাতালে পাঠায়,মাঝে মাঝেই সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে আমাদের সাথে বন্ধুসুলভ বাক্য বিনিময় করে ।মাঝে মাঝেই ওর সাথে ক্যান্টিনে বিনামূল্যে খেয়ে আমিও সবার মত প্রতিদিন মানুষ পিটানো বন্ধুর গুণগান করে ফিরে চলে আসি(গর্বের সঙ্গে)।

 

আমার বুদ্ধিজীবী বন্ধু সোহাগ,হ্যা বুদ্ধিজীবী শব্দটি সোহাগের জন্য যথার্থ,আমাদের বুদ্ধিজীবীদের মতই তাকে কখনও স্রোতের উল্টোদিকে দেখিনি।যখন তখন ভুরি ভুরি মিথ্যা কথা বলে চারপাশের মানুষকে যা তা(যা সে নিজেও বোঝেনা!!) বোঝাতে একেবারে ওস্তাদ ।মাঝে মাঝেই আবার নিজের মস্তিষ্কের ভার বোঝাতে ভেকধারী সুশীল হয়ে কোন জাতীয় ইস্যু নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের মত স্রোতের অনুকূলে চমৎকার এক একটা মন্তব্য করে ফেসবুকে,বেশ ভালই লাইক পড়ে।বিশ্ববিদ্যালয় এ ঢুকেই সোহাগ আবার অনেক চ্যারিটি শুরু করেছে(সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে!!!)।

ফেসবুকে ওর সমাজসেবার("রাস্তার ছেলেদের পেটভরে খাওয়ানো উৎসব") ছবিগুলো বেশ বড়সড় রকমের হিট,সোহাগও তাই(ইদানীং ফেসবুকে ঢুকলেই অনেক ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টও আসে!!!)।

প্রত্যেকবার চ্যারিটির পর বন্ধু আমাকে নিয়ে কেএফসি তে খেতে যায়,কি আর করবে!সারাদিন ঐ নোংরা হাভাতে টোকাই দের সাথে থেকে কিচ্ছুই মুখে তুলতে পারেনা বেচারা(ওইসব ছোটলোকদের পাশে কয়েক ঘণ্টা হাসিমুখে ক্যামেরার সামনে হাসিমুখে বসে থাকে,এইটাই যথেষ্ট নয়কি???)

 

নিজেকে নিয়ে বলব???নিজেকে নিয়ে বলবার তো আমার কিছুই নাই,যা বলার তা তো বলেই দিয়েছি এক কথায় "আমি স্বাভাবিক মানুষ" দিনে আট দশঘন্টা ঘুমাই, উঠতি কৈশোরের স্বপ্নগুলো (হাজার লাখ সবুজ স্বপ্ন) মধ্য যৌবনে পৌঁছোবার আগেই জলাঞ্জলি দিয়ে এখন কোনভাবে বাপ চাচার খাতিরে কোথাও একটা মাথা গুঁজবার চাকরিই আমার স্বপ্ন(স্বপ্নই যখন এই তখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন বাস্তবতা আমার কোথায়!!!)।

কখনও ঘুম থেকে উঠে সকাল দেখে মুগ্ধ হই,কখনও সব কাজ ফেলে ঘাসের উপর শুয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে আজেবাজে অনেক কিছুই ভাবি;লোকাল বাসে উঠে মাঝে মাঝে একদিন দুইদিন বাসে যাবার সময় মেয়েদের দেখে দাড়িয়ে পড়ে নিজের সিটে বসতে দেই আবার ওড়না একটু উঠে গেলেই আড়চোখে অবলাদের প্রতি আমার কর্তব্যকর্ম নিয়মিত পালন করি।

স্বাভাবিক মানুষের মতই কোন বিষয়েই আমার নিজের কোন ভাষ্য নেই,নিজের মনোভাব প্রকাশ করবার ইচ্ছা,ক্ষমতা,অভ্যাস

নেই।অনিকেত,রাসেল,শুভ,শাওন,সোহাগ দের মত চারপাশের অসংখ্য ভেকধারীদের দেখে অন্যদের মত আমিও হাততালি দেই,শব্দ করে উৎসাহ দেই ওদের,আমার চারপাশের অন্যান্য স্বাভাবিক মানুষদের মত আমারও খারাপকে খারাপ বলবার সামর্থ্য নেই,হবেও না কোনদিন(এই ব্যাপারে আমি আশাবাদী নই একেবারে নিঃসন্দেহ)।

 

চারপাশের হাজার হাজার স্বাভাবিক মানুষ অনেক কিছুই শেখে,কিন্তু মস্তিষ্কের ব্যবহার কখনও শেখেনা ।আমিও শিখিনি,কখনও শিখতেও চাইনি।আমি অন্যদের মুখের বুলি আওড়াই,অন্যদের ভেবে ঠিক করে রাখা জিনিস মাথায় ঢুকিয়ে বসে থাকি,অন্যরা কতদূর পথ নির্বিঘ্নে গেছে দেখে নিরাপদে সেটুকু পথ নিশ্চিন্তে পাড়ি জমাতে চাই,মন্ত্রির ছোট ভাইয়ের ভাড়া করে পোষা পিএস যখন ঠিক করে দেশের মানুষ কিভাবে বাঁচবে,আমি মেনে নেই।পরদিন সংবাদপত্রে বিখ্যাত সাংবাদিকএর কলামে সরকারের মন্ত্রির স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ পড়ে আমি সরকারবিরোধী হয়ে পড়ি,সবার কথা শুনে তাল মেলাতে মিনিটে মিনিটে আবুইল্যা বলে মানুষকে গালি দেই।মুক্তিযোদ্ধা বাবার মতই গোলাম আযম কে ঘেন্না করি আবার যখন লালনের ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা হয় তখন ক্ষোভ চেপে কিছুই হয়নি এমন ভাব দেখিয়ে সবার মত আমিও রাস্তা পাড় হয়ে হেঁটে যাই । আমি স্বাভাবিক।আমার বিবেক থাকতে নেই,আত্মসম্মান থাকতে নেই,প্রতিবাদ করবার শক্তি কিংবা ইচ্ছা থাকতে নেই।আমি ভাবিনা,কোন কিছু আমাকে ভাবায় না । ভাববার লোকেরা যখন ভেবে ভেবে কিছু বলে আমি মেনে নেই ।নিজের স্বার্থের প্রয়োজনে চোখ বন্ধ করে খুনির সাথে হাত মেলাতে আমার অসুবিধা হয়না।এত্ত দামি নিজের জীবনটাকে বাঁচিয়ে রাখাই আমার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য(হইলোই না হয় তেলাপোকার মত,তাতে কি!!!)।

একদিন নিজামিরা এই দেশটার রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেও আমি হাসি হাসি মুখ করে ঠিক মেনে নেব,তবু বেঁচে থাকব।সৎ হয়ে বেঁচে থাকা অসম্ভব(হয়ত),আত্মহত্যা কাপুরুষতা(আমার মত মানুষের কাছেও!!!),তাই স্বাভাবিক মানুষের ভিড়ে মাথা নিচু করে স্বাভাবিক মানুষের খোলস পড়ে বেঁচে থাকব আমি-সকালে,সন্ধ্যায়,রাতে---ভুলেও একবার এই খোলস ছাড়বার উপায় আমৃত্যু আমার নেই...আমাদের নেই......

 

                                                                      

                                                                                                                      __________________শুভ্র সখা

                                                                                      



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___