আওয়ামী লীগ একটি সাম্প্রদায়িক দল : গয়েশ্বর
স্টাফ রিপোর্টার
বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আওয়ামী লীগকে একটি সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, কারণ এই দলের জন্মই হয়েছে মুসলিম লীগ থেকে। জাতীয়তাবাদীরা কখনোই সাম্প্রদায়িক হতে পারে না। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি আওয়ামী লীগকে সেক্যুলার পার্টি (ধর্মনিরপেক্ষ) না বলে পিকিউলিয়ার পার্টি (অদ্ভুত) বলেও উল্লেখ করেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান জি-নাইনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা : সরকারের ব্যর্থতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গয়েশ্বর আসন্ন দুর্গাপূজায় হামলার আশঙ্কাও প্রকাশ করে বলেন, রামুর মতো ঘটনা যেন পূজায় না ঘটতে পারে, তার জন্য পূজা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের সাবধান থাকতে হবে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য রামুর ঘটনায় দেশের অসাম্প্রদায়িক সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে মন্তব্য করে বলেন, এতদিন ছিল না, তাই শুরু হলো—এটাই চিন্তার বিষয়। মা মরেছে-এটাতো দুঃখের, কিন্তু তার চেয়ে ভয়ের হলো-যম তো বাড়ি চিনে গেল। রামুর ঘটনায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জড়ানোর সরকারি পাঁয়তারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদের পর সরকারবিরোধী আন্দোলন যাতে চাঙ্গা না হয়, সেজন্য স্পর্শকাতর এসব বিষয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের জড়ানো হতে পারে। তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এ সরকারকে সবাই চোর বলছে। চোর ধরার উদ্যোগ নিতে হবে, তাদের আটকাতে হবে, যেন দেশ ছেড়ে এসব চোর পালাতে না পারে। মূল প্রবন্ধে তরুণ গবেষক ডা.সায়ন্থ সাখাওয়াত্ বলেন, রামুর ঘটনায় সরকারি দল দায়ী করছে বিরোধী দলকে। অপরদিকে বিরোধী দলও আঙুল তুলেছে সরকারি দলের দিকে। এই দুই পক্ষের পরস্পরের দোষারূপকে অনেকেই ভালো চোখে দেখছেন না। তারা বলছেন, এতে প্রকৃত দোষীরা আড়ালে চলে যাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি তার প্রবন্ধে বলেন, বিরোধী দল যদি সরকারি দলকে রামুর ঘটনায় অভিযুক্ত করে, তাহলে সেই অভিযোগ কেবলই অভিযোগ, অন্যকিছু নয়। এতে তদন্ত কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়ে না। কিন্তু সরকারি দল বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি কোনো অভিযোগ তোলেন, তাহলে তা আর অভিযোগ থাকে না। তাদের এই অভিযোগ তদন্ত কাজে প্রভাব ফেলে। যারা তদন্ত করছেন, তারা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথার বাইরে যেতে পারেন না। রামুর ঘটনায় সরকার যে তদন্ত কমিটি করেছে, এর প্রধানের বক্তব্য অনেকটা প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতার অনুরূপ। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলের আইনবিষয়ক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মনিরুজ্জামান মিঞা, বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান, বিশ্ব বৌদ্ধ ফেডারেশনের (বাংলাদেশ চ্যাপটার) সভাপতি অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জি-নাইন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। সভা শুরুর দিকে রামুর ঘটনার নানা তথ্যচিত্র নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে সংগঠনটি।
__._,_.___