মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, 'তোমরা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করোনা।নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, 'যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়কে অনুসরণ করবে; সে তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।হরতাল-অবরোধের ফলে যমীনে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি হয়; বিনা অপরাধে মানুষকে কষ্ট দেয়া ও মারা হয়, দেশের অর্থ ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি করা হয় অর্থাৎ হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ নষ্ট করা হয় এবং বিধর্মীদের নিয়মনীতি, তর্জতরীক্বা অনুসরণ করা হয়; যার প্রত্যেকটাই কাট্টা হারাম ও কুফরী।
তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয হচ্ছে, যমীনে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারী, জান-মালের ক্ষতিকারী এবং হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ নষ্টকারী হরতাল-অবরোধ; যা বিজাতীয় ও বিধর্মীদের কর্তৃক প্রবর্তিত তা পালন করা থেকে বেঁচে থাকা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, æযে ব্যক্তি দ্বীন ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন (নিয়মনীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।" (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-৮)
'হরতাল' শব্দের অর্থ- বিশৃঙ্খলা, অত্যাচার, স্বেচ্ছাচার, অবাধ্যতা, অরাজকতা, প্রতিবন্ধকতা, প্রতিরোধ ইত্যাদি অর্থাৎ এক কথায় ফাসাদ সৃষ্টি করে হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ নষ্ট করা ও মানুষদের কষ্ট দেয়া। হরতালের ব্যাখ্যায় বলা হয়, বিক্ষোভ প্রকাশের জন্য যানবাহন, হাটবাজার, দোকানপাট, অফিস-আদালত ইত্যাদি বন্ধ করা। হরতাল গুজরাটি শব্দ। 'হর' অর্থ প্রত্যেক। 'তাল' অর্থ তালা। অর্থাৎ প্রতি দরজায় তালা। কাজেই যার অর্থই বিশৃঙ্খলা, অত্যাচার, স্বেচ্ছাচারিতা, অবাধ্যতা, বিক্ষোভ, প্রতিরোধ অর্থাৎ এক কথায় ফাসাদ সৃষ্টি করে হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ নষ্ট করা ও মানুষদের কষ্ট দেয়া। তা কি করে সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে জায়িয হতে পারে?
হরতালের উদ্ভাবক ও প্রবর্তক হচ্ছে- ভারত উপমহাদেশের কুখ্যাত মুসলিম বিদ্বেষী মুশরিক পাপাত্মা বদচরিত্র সম্পন্ন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। ব্রিটিশদের রাউলাট আইন বাতিল করার জন্য সে তার প্রতিবাদে যে পদ্ধতি অবলম্বন করে সে পদ্ধতির নাম দেয় সে হরতাল। এই হরতাল পালিত হওয়ার কথা ছিল ১৯১৮ সালের ৩০শে মার্চ। পরে এই তারিখ পিছিয়ে ৬ই এপ্রিল করা হয়। ফলে কোন স্থানে ৩০ মার্চ আবার কোন স্থানে ৬ই এপ্রিল সর্বপ্রথম হরতাল পালিত হয়। কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী বদচরিত্র হিন্দুর প্রবর্তিত হরতাল হারাম হওয়ার কতিপয় কারণ হলো- বিধর্মীদের অনুসরণ করা হয়, জন-জীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, জান-মালের ক্ষতি হয়, একজনের অন্যায়ের শাস্তি অন্যকে দেয়া হয়, মানুষদেরকে কষ্ট দেয়া হয় অর্থাৎ হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ নষ্ট করা হয়। নাউযুবিল্লাহ!
চলমান হরতাল-অবরোধে গত ২০ দিনে অনেক মানুষ হত্যা করা হয়েছে, অনেককে দগ্ধ করা হয়েছে, অনেক যানবাহন পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, রেলে নাশকতা হয়েছে। যে কারণে ইতোমধ্যে প্রায় লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। পোশাক কারখানা মালিকদেরও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। চলমান অবরোধের কারণে পরিবহন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ পরিবহন শ্রমিক। পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকরা। তাদের শাক-সবজি, ফল ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যেরই দাম বাড়ছে। যা অনেকটা ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশ ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অতএব, কোনো মুসলমানের জন্য কোনো অবস্থাতেই হরতাল ও অবরোধ করা জায়িয নেই। বরং কাট্টা হারাম ও কুফরী।
__._,_.___