জ্বালাও - পোড়াও
ফরিদা মজিদ
বিলেত থেকে তারেক জিয়ার অনুসঙ্গী ও সুহৃদগনের প্রচারনা এসে পৌঁছায় আমার ই-মেইল এ। প্রচারনাগুলো একতরফা এই ডাইনী হাসিনার দমননীতির illegal ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতি বিষোদগারণ। লাগাতার হরতাল, অবরোধ ও নাশকতায় জর্জরিত দেশের আপামর জনতা। রেহাই নেই কারও- গরীব- বড়লোক, শ্রমিক-ফ্যাক্টরী মালিক দিনমুজুর, মধ্যবিত্ত, ছাত্র-শিক্ষক, ডাক্তার- রোগী, পেশাজীবি-ভিখারী, উকিল-মুহুরী, সাহিত্যিক- মোটর মেকানিক, মোট কথা শহর-গ্রাম-মফস্বলের বেবাক নাগরিক। উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোলে আজ বাংলার আকাশ-বাতাস প্রকৃতই রনিত।
আমি এই তারিক জিয়া গং এর গ্রæপ মেইল দু-তিনটে ছবি পোস্ট করলাম বীভৎস দৃশ্য- ঝলসে পোড়া নীরিহ মানুষের ছবি,হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বেডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। ভাবলাম ছবিগুলো দেখে যদি এই জিন্দাবাদওয়ালাদের পাষন্ড হৃদয় মানবিক করুণা রসে ঈষৎ সিঞ্চিত হয়।
না:। পাল্টা পোষ্টে লক্ষ্য করলাম তারা আরও উল্লসিত হয়ে এই অবৈধ বাকশালী সরকারের আসন্ন পতন কামনা করে জোরদার লেখা পাঠাচ্ছে। গ্রুপের অনেকে ভয়ঙ্কর হিন্দু এবং তথা হিন্দু ইন্ডিয়া বিদ্বেষী। আমার প্রতি ছোঁড়া হল কিছু 'ভারতের দালাল' জাতীয় গালাগালি।
আমার তখন মনে পড়ে গেল আঠারো শতকের সেই মহতি লেখক জনাথান সুইফট এর তীক্ষè স্যাটায়ার, 'আ মডেস্ট প্রোপোজাল' প্রবন্ধটির কথা। সেই প্রবন্ধে সুইফট আইরিশ দুর্ভিক্ষে মানুষের চরম দুর্দশার বিরুদ্ধে নৈতিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ইংরেজ জমিদারদের এক প্রস্তাব দিয়ে-- এই আইরিশ শিশুগুলো, যারা এখনও মাতৃদুগ্ধপায়ী ও হৃষ্টপুষ্ট , কঙ্কালসার হওয়ার আগে তাদেরকে ইংল্যান্ড এ পাচার করে দেয়া হোক। সেখানে শিশুগুলোকে রোষ্ট বানিয়ে তাদের খাবার টেবিলে পরিবেশিত হোক। আয়ারল্যান্ড এর একটি উত্তম রপ্তানীজাত উর্পাজন হবে।
একটি জঘন্য, বীভৎস পোড়ামানুষের ছবি দিয়ে আমি তখন ঐ গ্রুপ-মেইলে নোট দিলাম, এই পোড়া লাশগুলোকে বিমানযোগে লন্ডন পাঠিয়ে দেয়া হোক। তারপর সেখানে তারেক জিয়া তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ধুমধাম করে বারবিকিউ পার্টি দিক। সেই পার্টির মিউজিক ও নর্তন কুর্তন এর ভিডিও পোষ্ট করা হবে ফেসবুকে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবী করা আন্দোলনের সাফল্য ঘোষণা করে।
আসলে পেট্রোল বোমা বানানো, মহল্লায় ঝটিকা রায়ট লাগানো ও নীরিহ মানুষের প্রতি বোমা ছুড়ে মারার কলা- কৌশল গুলো সম্পর্কে লন্ডনের জিন্দাবাদওয়ালারা হয়ত অতটা ওয়াকিবহাল নয় -- তারা কেবল মক্কেল। নাশকতার সর্বাধুনিক মুন্সীয়ানা আমদানিকৃত হয় মধ্যপ্রাচ্যের আল- কায়েদার কেন্দ্রীয় কর্মশালা থেকে। পাকিস্তানি আইএসআই এজেন্টরা মধ্যস্ততা করেন সেসব কলাকৌশল বাংলাদেশে পণ্যজাত করার জন্য। এ নিয়ে সম্প্রতি পাকিস্তানি দূতাবাসে তদন্তের কথা তো সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে।
এইসব বর্বরোচিত হামলার টার্গেট কেন বাংলাদেশ? বাংলাদেশের অপরাধ হলো সে একটি মুসলমান অধ্যুষিত দেশ হওয়া সত্ত্বেও সেকুলার ঐতিহ্যের গর্ব করে, এবং ১৯৭১ এ দ্বিজাতি তত্ত্বের পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে একটি প্রকৃত সেকুলার রাষ্ট্রের স্বপ্নে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল।
ফরিদা মজিদ
বিলেত থেকে তারেক জিয়ার অনুসঙ্গী ও সুহৃদগনের প্রচারনা এসে পৌঁছায় আমার ই-মেইল এ। প্রচারনাগুলো একতরফা এই ডাইনী হাসিনার দমননীতির illegal ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতি বিষোদগারণ। লাগাতার হরতাল, অবরোধ ও নাশকতায় জর্জরিত দেশের আপামর জনতা। রেহাই নেই কারও- গরীব- বড়লোক, শ্রমিক-ফ্যাক্টরী মালিক দিনমুজুর, মধ্যবিত্ত, ছাত্র-শিক্ষক, ডাক্তার- রোগী, পেশাজীবি-ভিখারী, উকিল-মুহুরী, সাহিত্যিক- মোটর মেকানিক, মোট কথা শহর-গ্রাম-মফস্বলের বেবাক নাগরিক। উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোলে আজ বাংলার আকাশ-বাতাস প্রকৃতই রনিত।
আমি এই তারিক জিয়া গং এর গ্রæপ মেইল দু-তিনটে ছবি পোস্ট করলাম বীভৎস দৃশ্য- ঝলসে পোড়া নীরিহ মানুষের ছবি,হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বেডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। ভাবলাম ছবিগুলো দেখে যদি এই জিন্দাবাদওয়ালাদের পাষন্ড হৃদয় মানবিক করুণা রসে ঈষৎ সিঞ্চিত হয়।
না:। পাল্টা পোষ্টে লক্ষ্য করলাম তারা আরও উল্লসিত হয়ে এই অবৈধ বাকশালী সরকারের আসন্ন পতন কামনা করে জোরদার লেখা পাঠাচ্ছে। গ্রুপের অনেকে ভয়ঙ্কর হিন্দু এবং তথা হিন্দু ইন্ডিয়া বিদ্বেষী। আমার প্রতি ছোঁড়া হল কিছু 'ভারতের দালাল' জাতীয় গালাগালি।
আমার তখন মনে পড়ে গেল আঠারো শতকের সেই মহতি লেখক জনাথান সুইফট এর তীক্ষè স্যাটায়ার, 'আ মডেস্ট প্রোপোজাল' প্রবন্ধটির কথা। সেই প্রবন্ধে সুইফট আইরিশ দুর্ভিক্ষে মানুষের চরম দুর্দশার বিরুদ্ধে নৈতিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ইংরেজ জমিদারদের এক প্রস্তাব দিয়ে-- এই আইরিশ শিশুগুলো, যারা এখনও মাতৃদুগ্ধপায়ী ও হৃষ্টপুষ্ট , কঙ্কালসার হওয়ার আগে তাদেরকে ইংল্যান্ড এ পাচার করে দেয়া হোক। সেখানে শিশুগুলোকে রোষ্ট বানিয়ে তাদের খাবার টেবিলে পরিবেশিত হোক। আয়ারল্যান্ড এর একটি উত্তম রপ্তানীজাত উর্পাজন হবে।
একটি জঘন্য, বীভৎস পোড়ামানুষের ছবি দিয়ে আমি তখন ঐ গ্রুপ-মেইলে নোট দিলাম, এই পোড়া লাশগুলোকে বিমানযোগে লন্ডন পাঠিয়ে দেয়া হোক। তারপর সেখানে তারেক জিয়া তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ধুমধাম করে বারবিকিউ পার্টি দিক। সেই পার্টির মিউজিক ও নর্তন কুর্তন এর ভিডিও পোষ্ট করা হবে ফেসবুকে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবী করা আন্দোলনের সাফল্য ঘোষণা করে।
আসলে পেট্রোল বোমা বানানো, মহল্লায় ঝটিকা রায়ট লাগানো ও নীরিহ মানুষের প্রতি বোমা ছুড়ে মারার কলা- কৌশল গুলো সম্পর্কে লন্ডনের জিন্দাবাদওয়ালারা হয়ত অতটা ওয়াকিবহাল নয় -- তারা কেবল মক্কেল। নাশকতার সর্বাধুনিক মুন্সীয়ানা আমদানিকৃত হয় মধ্যপ্রাচ্যের আল- কায়েদার কেন্দ্রীয় কর্মশালা থেকে। পাকিস্তানি আইএসআই এজেন্টরা মধ্যস্ততা করেন সেসব কলাকৌশল বাংলাদেশে পণ্যজাত করার জন্য। এ নিয়ে সম্প্রতি পাকিস্তানি দূতাবাসে তদন্তের কথা তো সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে।
এইসব বর্বরোচিত হামলার টার্গেট কেন বাংলাদেশ? বাংলাদেশের অপরাধ হলো সে একটি মুসলমান অধ্যুষিত দেশ হওয়া সত্ত্বেও সেকুলার ঐতিহ্যের গর্ব করে, এবং ১৯৭১ এ দ্বিজাতি তত্ত্বের পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে একটি প্রকৃত সেকুলার রাষ্ট্রের স্বপ্নে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল।
__._,_.___