ধ্বংসস্তূপে খাওয়া দাওয়া রাতযাপন
বারুদ ছিটিয়ে আগুন নিমেষেই সব শেষ
মাহবুবুর রহমান, নোয়াখালী | তারিখ: ০৭-০৩-২০১৩
ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার টুঙ্গিরপাড় গ্রামের গৃহবধূ বন্দনা রায় চৌধুরী। সাত দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জীবন কাটছে তাঁর। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর তাঁর বসতঘরটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো
চারদিকে আগুনে পোড়া ধ্বংসস্তূপ। ঘরের ভিটেয় পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া টিন। এর মধ্যেই চলছে বাসিন্দাদের রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া ও রাতযাপন। গতকাল বুধবার দুপুরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার টুঙ্গিরপাড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
ওই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দুপুরে মাটির চুলায় রান্না করছিলেন গৃহবধূ বন্ধনা চৌধুরী। তিনি বললেন, 'ছয় দিন ধরে আমরা এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আছি। এখাইে রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া ও রাতযাপন। এভাবে কি কোনো মানুষ বাঁচতে পারে?'
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর জামায়াত-শিবিরের কয়েক শ নেতা-কর্মী ও সমর্থক টুঙ্গিপাড়া ও পাশের আলাদীনগর গ্রামের আটটি বাড়িতে আগুন দেয়। লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। এসব বাড়িতে মোট ৬৫টি পরিবার বসবাস করে। ওই দিনের আগুনে ২৫টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
গতকাল গ্রাম দুটিতে গিয়ে দেখা যায়, খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে পরিবারের সদস্যরা। আলাদীনগর গ্রামের দুলাল চন্দ্র দাস বলেন, 'প্রতিটি ঘরে আগুন লাগানোর আগে বারুদ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এতে অল্প সময়ে সব দাউ দাউ করে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সব। কয়েক শ লোক ওই হামলা চালায়। ওদের ভয়ে আমরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিই। তা না হলে হয়তো প্রাণে রক্ষা পেতাম না। কিন্তু এখন বেঁচে থেকেও মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই।'
একই গ্রামের অমূল্য চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, 'আগুনে নিজের ঘরে থাকা টাকাপয়সা, স্বর্ণালংকারসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই। দিনের বেলা নাহয় এদিক-সেদিক ঘুরেফিরে কাটানো যায়। কিন্তু রাতে ঘুমানোর জন্য একটু জায়গার দরকার হয়। সরকার আমাদের যে পরিমাণ টিন আর টাকা দিয়েছে, এতে তো ঘর তৈরি করা সম্ভব না।'
আগুনে পোড়া ধ্বংসস্তূপেই চারপাশে টিন দিয়ে ঘের দেওয়া একটি স্থানে খোলা আকাশের নিচে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকেন একই গ্রামের শিখা রানী। সেখানে দুপুরের রান্না বসিয়েছেন। শিখা বলেন, 'আমাদের সবই ছিল। দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া আগুনে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। পরনের কাপড় ছাড়া পরিবারের কারোরই আর কোনো কাপড় পর্যন্ত অবশিষ্ট নাই।'
জেলা প্রশাসক মো. সিরাজুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, তিনি বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারে ৫০ কেজি করে চাল, পাঁচ কেজি করে আলু ও মসুর ডাল এবং ৫০টি কম্বল বিতরণ করেছেন।
বিএনপির ত্রাণ বিতরণ: উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা কমিটির সভাপতি আবদুর রহিম ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস গতকাল দুপুরে ৮০টি পরিবারে ৫০ কেজি করে চাল, দুটি শাড়ি, একটি লুঙ্গি ও একটি করে মশারি বিতরণ করেন।
http://prothom-alo.com/detail/date/2013-03-07/news/334501
জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব : শহরে বেরিয়ে স্তম্ভিত বগুড়াবাসী
শরিফুল হাসান, মিলন রহমান ও আনোয়ার পারভেজ, বগুড়া থেকে | তারিখ: ০৭-০৩-২০১৩
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ ভবনে গত রোববার ভাঙচুর ও হামলার পর আগুন ধরিয়ে দেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। পুড়ে যাওয়া ভবনের একটি কক্ষের এই দৃশ্য গতকাল দুপুরে তোলা
ছবি: প্রথম আলো
http://prothom-alo.com/detail/date/2013-03-07/news/334498
বাঁশখালীতে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব
তারা এসে পানি চেয়ে খেল, পরে আগুন দিল ঘরে
প্রণব বল, বাঁশখালী থেকে ফিরে | তারিখ: ০৫-০৩-২০১৩
http://prothom-alo.com/detail/date/2013-03-05/news/334027
তারা এসে পানি চেয়ে খেল, পরে আগুন দিল ঘরে
নাগরিক সমাজের আহ্বান
সাম্প্রদায়িক হামলা, সহিংস তৎপরতা রুখে দাঁড়াও
বিশেষ প্রতিনিধি | তারিখ: ০৫-০৩-২০১৩
__._,_.___