পথে পথে
লায়েকুজ্জামান
তেতাল্লিশ টাকা আটা আর চল্লিশ টাকা চালের চেয়ে হাসিনা-খালেদার চুলোচুলি করে দেশ চালানোও ভাল। ভেবে ছিলাম ভাল থাকবো, এখন দেখি আরও খারাপ। আরে ভাই হাসিনা-খালেদা মারামারি করলেও আমাগো তো ভাতে মারে নাই। আয় যা ছিল তার চেয়ে আরও কমেছে কিন্তু চালের দাম তো সমানে বাড়তেই আছে। প্রায় এক দমে কথাগুলো বললেন রফিকুল ইসলাম নামের এক যুবক। বাড়ি তার রাজবাড়ী শহরে। টুকটাক ব্যবসা করে সংসার চালান। গতকাল দৌলতদিয়া ঘাটের একটি চায়ের দোকানে বসে কথা হয় তার সঙ্গে, সময় তখন সকাল সাড়ে দশটা। ফেরিঘাটে যানজট, বাস- ট্রাকের দীর্ঘ সারি। ঢাকা থেকে সড়ক পথে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে যাতায়াতে এক যন্ত্রণার নাম পদ্মা নদী, যার এক পাড়ে পাটুরিয়া, অন্য পাড়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। প্রতিদিন গড়ে পঞ্চাশ হাজার মানুষ এপার-ওপার হয় এই ঘাট দিয়ে। লঞ্চে উঠতে বিকট আওয়াজে চিৎকার করছিলেন এক ভদ্রলোক। কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কি ব্যাপার চাচা কি হয়েছে? ভদ্রলোক একখানা টিকিট দেখিয়ে বললেন দেখুন না, ঘাট পারাপারে টিকিট দিচ্ছে তাতে লেখা ১ টাকা অথচ নিচ্ছে ২ টাকা করে। আবার না দিতে চাইলে মারতে আসে। আবার দেখুন লঞ্চের টিকিট এখানে লেখা ৯ টাকা কিন্তু নিচ্ছে ১০ টাকা করে। প্রতিবাদ করলে একযোগে দশ-পনেরজন মিলে তেড়ে আসে। সরকার আসার প্রথম মাস দুয়েক ভাল ছিল। এখন আবার যা তাই। ভদ্রলোক জানালেন তার নাম আবুল কালাম, বাড়ি ঝালকাঠি জেলার শেখেরহাট গ্রামে।
দৌলতদিয়া বাসস্ট্যান্ডের পাশেই বাঁশের ব্যবসা করেন ওমেদ ব্যাপারী। তার বাড়ি বসন্তপুর ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামে। বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাঁশ কিনে বিক্রি করেন। ওমেদ জানালেন, তার সংসারে লোক মোট কুড়িজন। দুই ছেলে সহ তিনি নিজে জড়িত একই ব্যবসার সঙ্গে। তিনজনে মিলে এখন তাদের দিনের আয় সর্বসাকুল্যে দু' শ' টাকাÑ প্রতিদিন সংসারে চাল লাগে ৮ কেজি। সবচেয়ে মোটা চাল কিনলেও তার দাম ২৪০ টাকা। ওমেদ ব্যাপারীর পাল্টা প্রশ্ন কেমনভাবে বেঁচে আছি এবার আপনিই বলেন। দৌলতদিয়া ঘাটের রিকশাচালক নুর ইসলাম, জাহিদ, আবু বক্কার বললেন তাদের দুঃখের কাহিনী। এদের কারও দিনের আয় এখন ৮০ টাকার বেশি নয়। সংসারে গড়ে প্রত্যেকের খাওয়ার লোক ৫ জন করে। যা আয় করেন তা দিয়ে চালের যোগানই হয় না। এরা কেউ এখন আর রিকশা মালিকের ভাড়ার টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না।
নাসিমা বেগমের একটি আবেদন আছে সরকারের কাছেÑ বড় অনুনয় বিনয় করে নাসিমা বলেছেন, সরকার যেন চালের দামটা কমায়। দৌলতদিয়া ঘাটে ছোট্ট খুপরি ঘরে একটি ভাতের হোটেল করেন নাসিমা বেগম। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে কষ্টে কাটছে তার জীবন। এক দফা উচ্ছেদের শিকার হয়ে প্রায় দশ হাজার টাকা দেনা হয়েছে। নাসিমা বলেন, বর্তমানে চালের দাম বাড়ার পর বেচা-বিক্রি আরও কমেছে।
বেলা তখন ভর দুপুর, গোয়ালন্দ রেলস্টেশনে বসে কথা বলছিলাম এক পানদোকানির সঙ্গে, নাম ইদ্রিস আলী। দীর্ঘদিন ধরে এখানে দোকান করেন। মাঝখানে উচ্ছেদ হয়ে বেকার ছিলেন দুই মাস। পনের হাজার টাকা সুদে এনে আবার একটি দোকান দিয়েছেন। ইদ্রিসের খুব ইচ্ছা তার দুঃখের কাহিনাটা শোনানো। জানান, নির্বিচারে উচ্ছেদের কারণে এই রেলস্টেশনেই বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ। তার কথা ফুরায় না, এর মধ্যেই সেখানে জড়ো হয়ে যায় প্রায় শ'খানেক বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। সবাই কথা বলতে চায়। মজমার একেবারে পেছন থেকে রাজশাহীর আঞ্চলিক ভাষায় চেঁচিয়ে উঠেন একজন, আমি কিছু বলতে চাই, নাম আবদুর রহমান, বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী। তিনি বলেন, আমরাতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক বছর দেখলাম, তারা তো সব কিছুর দাম দ্বিগুণ করে দিয়েছে। তারা ক্ষমতায় থাকলে দাম আরও বাড়বে। এখন তাদের উচিত দয়া করে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া। আবদুর রহমানের কথা শেষ না হতেই লোকজনের ভিড় ঠেলে সামনে আসেন আজাদ নামের এক পরিবহন শ্রমিক। তিনি বলেন, ভাইজান একটা কথা শুনুনÑ দেশে ঘুষ-দুর্নীতি কিছুই কমেনি বরং বেড়েছে, পার্থক্য হলো আগে প্রকাশ্যে হতো এখন গোপনে হয় দ্বিগুণ রেটে। রেলস্টেশনের পাশেই যৌনপল্লী দৌলতদিয়া পতিতালয়। কেমন আছেন সেখানকার তিন হাজার যৌনকর্মী। তাদের নেত্রী সাথি বললেন, শুধুমাত্র এক মুঠো ভাতের জন্য আমরা দুনিয়ার সবচেয়ে ঘৃণিত নিচু কাজ করতে এখানে এসেছিলাম। এখন গত এক বছর ধরে খদ্দের এত কম যে, ভাতের অভাবে মেয়েরা না খেয়ে মরছে। সাথি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, বলুন তো ভাই পৃথিবীতে এমন আর কি নিচু কাজ আছে যা করলে এক মুঠো ভাত পাবে মেয়েরা? কথা বলতে বলতে সাথির সঙ্গে যোগ দেয় আরও বেশ ক'জন।
দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ীর উদ্দেশে লোকাল বাসে যাত্রা। বাসভর্তি লোক। ভাড়া নিয়ে এক যুবকের সঙ্গে প্রচণ্ড কথা কাটাকাটি কন্ডাক্টরের। দু'জনই নাছোড়বান্দা। এক পর্যায়ে থেমে গেল অন্য এক যাত্রীর হস্তক্ষেপে। শুরু হলো দ্রব্যমূল্য নিয়ে আলোচনা। বাসের লোকেরা কেউ বলে হাসিনার সময় ভাল ছিলাম, কেউ বলে খালেদার সময় ভাল ছিল। হাল আমলে ভাল থাকার কথা বলে না কেউই।[/sb
বিস্তারিত http://www.manabzamin.net/page1.htm
লায়েকুজ্জামান
তেতাল্লিশ টাকা আটা আর চল্লিশ টাকা চালের চেয়ে হাসিনা-খালেদার চুলোচুলি করে দেশ চালানোও ভাল। ভেবে ছিলাম ভাল থাকবো, এখন দেখি আরও খারাপ। আরে ভাই হাসিনা-খালেদা মারামারি করলেও আমাগো তো ভাতে মারে নাই। আয় যা ছিল তার চেয়ে আরও কমেছে কিন্তু চালের দাম তো সমানে বাড়তেই আছে। প্রায় এক দমে কথাগুলো বললেন রফিকুল ইসলাম নামের এক যুবক। বাড়ি তার রাজবাড়ী শহরে। টুকটাক ব্যবসা করে সংসার চালান। গতকাল দৌলতদিয়া ঘাটের একটি চায়ের দোকানে বসে কথা হয় তার সঙ্গে, সময় তখন সকাল সাড়ে দশটা। ফেরিঘাটে যানজট, বাস- ট্রাকের দীর্ঘ সারি। ঢাকা থেকে সড়ক পথে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে যাতায়াতে এক যন্ত্রণার নাম পদ্মা নদী, যার এক পাড়ে পাটুরিয়া, অন্য পাড়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। প্রতিদিন গড়ে পঞ্চাশ হাজার মানুষ এপার-ওপার হয় এই ঘাট দিয়ে। লঞ্চে উঠতে বিকট আওয়াজে চিৎকার করছিলেন এক ভদ্রলোক। কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কি ব্যাপার চাচা কি হয়েছে? ভদ্রলোক একখানা টিকিট দেখিয়ে বললেন দেখুন না, ঘাট পারাপারে টিকিট দিচ্ছে তাতে লেখা ১ টাকা অথচ নিচ্ছে ২ টাকা করে। আবার না দিতে চাইলে মারতে আসে। আবার দেখুন লঞ্চের টিকিট এখানে লেখা ৯ টাকা কিন্তু নিচ্ছে ১০ টাকা করে। প্রতিবাদ করলে একযোগে দশ-পনেরজন মিলে তেড়ে আসে। সরকার আসার প্রথম মাস দুয়েক ভাল ছিল। এখন আবার যা তাই। ভদ্রলোক জানালেন তার নাম আবুল কালাম, বাড়ি ঝালকাঠি জেলার শেখেরহাট গ্রামে।
দৌলতদিয়া বাসস্ট্যান্ডের পাশেই বাঁশের ব্যবসা করেন ওমেদ ব্যাপারী। তার বাড়ি বসন্তপুর ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামে। বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাঁশ কিনে বিক্রি করেন। ওমেদ জানালেন, তার সংসারে লোক মোট কুড়িজন। দুই ছেলে সহ তিনি নিজে জড়িত একই ব্যবসার সঙ্গে। তিনজনে মিলে এখন তাদের দিনের আয় সর্বসাকুল্যে দু' শ' টাকাÑ প্রতিদিন সংসারে চাল লাগে ৮ কেজি। সবচেয়ে মোটা চাল কিনলেও তার দাম ২৪০ টাকা। ওমেদ ব্যাপারীর পাল্টা প্রশ্ন কেমনভাবে বেঁচে আছি এবার আপনিই বলেন। দৌলতদিয়া ঘাটের রিকশাচালক নুর ইসলাম, জাহিদ, আবু বক্কার বললেন তাদের দুঃখের কাহিনী। এদের কারও দিনের আয় এখন ৮০ টাকার বেশি নয়। সংসারে গড়ে প্রত্যেকের খাওয়ার লোক ৫ জন করে। যা আয় করেন তা দিয়ে চালের যোগানই হয় না। এরা কেউ এখন আর রিকশা মালিকের ভাড়ার টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না।
নাসিমা বেগমের একটি আবেদন আছে সরকারের কাছেÑ বড় অনুনয় বিনয় করে নাসিমা বলেছেন, সরকার যেন চালের দামটা কমায়। দৌলতদিয়া ঘাটে ছোট্ট খুপরি ঘরে একটি ভাতের হোটেল করেন নাসিমা বেগম। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে কষ্টে কাটছে তার জীবন। এক দফা উচ্ছেদের শিকার হয়ে প্রায় দশ হাজার টাকা দেনা হয়েছে। নাসিমা বলেন, বর্তমানে চালের দাম বাড়ার পর বেচা-বিক্রি আরও কমেছে।
বেলা তখন ভর দুপুর, গোয়ালন্দ রেলস্টেশনে বসে কথা বলছিলাম এক পানদোকানির সঙ্গে, নাম ইদ্রিস আলী। দীর্ঘদিন ধরে এখানে দোকান করেন। মাঝখানে উচ্ছেদ হয়ে বেকার ছিলেন দুই মাস। পনের হাজার টাকা সুদে এনে আবার একটি দোকান দিয়েছেন। ইদ্রিসের খুব ইচ্ছা তার দুঃখের কাহিনাটা শোনানো। জানান, নির্বিচারে উচ্ছেদের কারণে এই রেলস্টেশনেই বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ। তার কথা ফুরায় না, এর মধ্যেই সেখানে জড়ো হয়ে যায় প্রায় শ'খানেক বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। সবাই কথা বলতে চায়। মজমার একেবারে পেছন থেকে রাজশাহীর আঞ্চলিক ভাষায় চেঁচিয়ে উঠেন একজন, আমি কিছু বলতে চাই, নাম আবদুর রহমান, বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী। তিনি বলেন, আমরাতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক বছর দেখলাম, তারা তো সব কিছুর দাম দ্বিগুণ করে দিয়েছে। তারা ক্ষমতায় থাকলে দাম আরও বাড়বে। এখন তাদের উচিত দয়া করে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া। আবদুর রহমানের কথা শেষ না হতেই লোকজনের ভিড় ঠেলে সামনে আসেন আজাদ নামের এক পরিবহন শ্রমিক। তিনি বলেন, ভাইজান একটা কথা শুনুনÑ দেশে ঘুষ-দুর্নীতি কিছুই কমেনি বরং বেড়েছে, পার্থক্য হলো আগে প্রকাশ্যে হতো এখন গোপনে হয় দ্বিগুণ রেটে। রেলস্টেশনের পাশেই যৌনপল্লী দৌলতদিয়া পতিতালয়। কেমন আছেন সেখানকার তিন হাজার যৌনকর্মী। তাদের নেত্রী সাথি বললেন, শুধুমাত্র এক মুঠো ভাতের জন্য আমরা দুনিয়ার সবচেয়ে ঘৃণিত নিচু কাজ করতে এখানে এসেছিলাম। এখন গত এক বছর ধরে খদ্দের এত কম যে, ভাতের অভাবে মেয়েরা না খেয়ে মরছে। সাথি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, বলুন তো ভাই পৃথিবীতে এমন আর কি নিচু কাজ আছে যা করলে এক মুঠো ভাত পাবে মেয়েরা? কথা বলতে বলতে সাথির সঙ্গে যোগ দেয় আরও বেশ ক'জন।
দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ীর উদ্দেশে লোকাল বাসে যাত্রা। বাসভর্তি লোক। ভাড়া নিয়ে এক যুবকের সঙ্গে প্রচণ্ড কথা কাটাকাটি কন্ডাক্টরের। দু'জনই নাছোড়বান্দা। এক পর্যায়ে থেমে গেল অন্য এক যাত্রীর হস্তক্ষেপে। শুরু হলো দ্রব্যমূল্য নিয়ে আলোচনা। বাসের লোকেরা কেউ বলে হাসিনার সময় ভাল ছিলাম, কেউ বলে খালেদার সময় ভাল ছিল। হাল আমলে ভাল থাকার কথা বলে না কেউই।[/sb
বিস্তারিত http://www.manabzamin.net/page1.htm
Is this CTG is better than Ershad in case of political party reform and anti corruption drive and dealings with teachers and Students ?
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
Sobhan Allah- Only Allah flawless
Alhamdulillah - All praise to be of Allah
Allah hu Akbar - Allah, the Greatest
Alhamdulillah - All praise to be of Allah
Allah hu Akbar - Allah, the Greatest
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------Would Be Mahathir of BD
Never miss a thing. Make Yahoo your homepage. __._,_.___
Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe
__,_._,___