Banner Advertiser

Sunday, January 5, 2014

[mukto-mona] ভোট ঠেকাতে জামায়াত বিএনপির হিংস্র সন্ত্রাসের বলি ২১



সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৪, ২৩ পৌষ ১৪২
ভোট ঠেকাতে জামায়াত বিএনপির হিংস্র সন্ত্রাসের বলি ২১
স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনী সহিংসতায় সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও আনসার সদস্যসহ ১৪ জেলায় মারা গেছেন ২১ জন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই জামায়াত-শিবির ও বিএনপি নেতাকর্মী। দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে চারজন করে আটজন মারা গেছেন। তবে কমবেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বেশিরভাগ জেলায়। নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮ দলের নেতাকর্মীরা ব্যাপক সহিংসতা চালায় শনিবার থেকেই। রবিবার সহিংসতার মাত্রা বাড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ভোটারদের ওপর হামলা, ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার-কেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়া, ভোটবাক্স ছিনতাইকালে নির্বাচনবিরোধীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নির্বাচন বানচালের মিশনে বেশিরভাগ স্থানে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ছিল বেপরোয়া। ককটেল, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপসহ বিভিন্ন স্থানে লাঠি মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির। বিভিন্ন স্থানে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সাধারণ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে হুমকি দিয়েছে তারা। 
রাজধানীতে বিক্ষিপ্ত সহিংসতা
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বোমা বিস্ফোরণে এক আনসার সদস্য, শিশুসহ প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে। পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিস্ফোরণে এক শিশু ডান হাতের কব্জি উড়ে গেছে। আর পুরানো কদমতলী ও চকবাজারে দুটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই হাতবোমা বিস্ফোরণে এক আনসার সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। শ্যামপুর মডেল স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রের সামনে ও ছাদে তিনটি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে বোমা বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এ সময় এক বোমাহামলাকারীসহ প্রায় ১০ জনকে আটক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একজনকে কারাদ- দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। 
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার ভোট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় চকবাজার থানাধীন লালবাগ পোস্তাগোলা ভোর সাড়ে ৫টায় লালবাগের পোস্তা এলাকায় কাগজ কুড়াচ্ছিলেন শিশু রাকিব (৯)। এ সময় সেখানে লাল স্কস্টেপ পেঁচানো ককটেলটি বল ভেবে হাতে নিয়ে খেলা করছিল রাকিব। হঠাৎ বিকট আওয়াজে বিস্ফোরিত হয়। এতে তার ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রবিবার সকালে ভোটগ্রহণের সময় পুরান ঢাকার কদমতলী ও চকবাজারে দুটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই হাতবোমা বিস্ফোরণে এক আনসার সদস্যসহ ৫জন আহত হয়। এর মধ্যে সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকা-৫ আসনের কদমতলী এলাকায় অনির্বান প্রিক্যাডেট স্কুল ভোটকেন্দ্রের সামনে পাশের বাড়ি ছাদ থেকে কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে ওই কেন্দ্রের সামনের রাস্তায়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে ভোটকেন্দ্রে কর্তব্যরত আনসার সদস্য ইউনুস আলী, ভোটার পরিবহন শ্রমিক আমির হোসেন (৫০), আলী আকবর (২৮) ও তার শিশু মেয়ে জান্নাতুল (৪) এবং বোমা হামলাকারী সোলায়মান শাহ আহত হয়। পরে পুলিশ ওই ছাদে থাকা হামলাকারীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। হামলাকারীরা ছাদ থেকে নামার সময় তার সঙ্গে থাকা ককটেল বিস্ফোরণে হামলাকারী সোলায়মান আহত হয়। এ ঘটনায় তাকে আটক করা গেলেও বাকিরা পালিয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৮টায় খিলগাঁও আমতলী বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালানোর সময় ইকবাল হোসেন (১৮) নামের এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। এ সময় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিলু রায়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরের কারাদ- দিয়েছেন।
যশোরে জামায়াত কর্মীর মৃত্যু ॥ স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস জানায় যশোরের মনিরামপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক জামায়াতকর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত মতিয়ার রহমান (২০) উপজেলার বিপ্রকোনা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। উপজেলার বাজিতপুর ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার রবিবার বিকেলে মৃত্যু হয়। স্থানীয় দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার বাহাদুর আলী তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুপুর আড়াইটায় জামায়াত-শিবিরের একদল সশস্ত্র ক্যাডার উপজেলার দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের বাজিতপুর কেন্দ্রে হামলা চালায়। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে তা-বকালে তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় দু'পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হলে মতিয়ার গুলিবিদ্ধ হয়। হামলাকারীরা তাকে নিয়ে তার বাড়িতে চলে যায়। সেখানেই বিকেল পৌনে ৫টায় তার মৃত্যু হয়। 
লালমনিরহাটের আহত যুবদল নেতার মৃত্যু ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট থেকে জানান, লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামের বাউরা ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্র দখল করতে গিয়ে আহত যুবদল নেতা মোঃ ফারুক হোসেন (৩৫) রবিবার ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। শনিবার সকাল ১১টায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার সফিরহাট গ্রামে বিএনপি-জামায়াত ও শিবির ক্যাডাররা রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। উভয় দলের কর্মীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘটনাস্থলে একজন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মারা যান। স্থানীয় যুবদল নেতা ফারুক হোসেন গুরুতর আহত হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ভোর রাতে মারা য়ায়। জেলা সদরের মহেন্দ্রনগরের ম-লেরহাট কুর্শামারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে রাত ১০টায় বিএনপি-জামায়াত ও শিবিরের দুর্বৃত্তরা হামলা করে। তারা হামলা ও পুলিশ পিকাপভ্যানে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে এক সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। জামায়াত-বিএনপিকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে। লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জমির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। কুশামারী ভোটকেন্দ্রের আশপাশে শুকান দিঘী, কুর্শামারী, রতিপুর, খালিশা ও মৃতিঙ্গা গ্রাম কয়টি সংখ্যালঘু ও হিন্দু পরিবার অধ্যুষিত। এ গ্রাম কয়টিতে সন্ধ্যার পরপর মুখে কালো কাপড় পড়ে দুবৃর্ত্তরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্র না যাওয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
লোহাগাড়ায় পুলিশের গুলিতে শিবির কর্মী নিহত ॥ স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস জানায় ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় একটি ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই প্রচেষ্টা কালে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে এক শিবিরকর্মী। এছাড়া জেলার ৯টি আসনে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া চরম উৎকণ্ঠার মধ্যেও ভোটগ্রহণ মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জামায়াত প্রভাবিত সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে বিক্ষিপ্ত বোমাবাজি ও একজনের মৃত্যুর ঘটনা বাদ দিলে অন্য আসনগুলোতে পরিস্থিতি ছিল শান্ত। তবে নির্বাচনে ভোটের হার ছিল তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম। বিশেষ করে নারী ভোটারদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। দিনের শুরুতে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার কম দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ হার বৃদ্ধি পায়। ভোট শেষ হওয়ার পর সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রার্থীরা। 
চট্টগ্রামের ৯টি আসনের মধ্যে দুটি আসন নগরীতে। এ দুটি আসন হলো চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) ও চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)। এর বাইরে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনের আংশিক নগরীর আওতাধীন। শনিবার রাতে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র এলাকায় বিক্ষিপ্ত বোমাবাজির মাধ্যমে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের আওতাধীন বন্দর মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১০টায় গিয়ে দেখা যায় ভোটার উপস্থিতি কম। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোঃ বাহারুল ইসলাম জানান, ১০টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মোট ২ হাজার ৭৪৭ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়ে ৯৪টি। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট ভাল বলে অভিমত ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা। 
নগরীর সবকটি কেন্দ্রেই মহিলা ভোটার উপস্থিতি যথেষ্ট কম লক্ষ্য করা যায়। পতেঙ্গার গ্রীন ভিউ মডেল হাইস্কুল মহিলা কেন্দ্রে বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত ভোট পড়ে মাত্র ১টি। এ কেন্দ্রে ভোটার ৪ হাজার ৪৬৬ জন। পতেঙ্গার ওশান পাবলিক স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোঃ নুরুন নবী জানান, বেলা পৌনে এগারোটার মধ্যে ভোট পড়ে ৬৫টি। একেন্দ্রে ভোটার ২ হাজার ৯৩৩ জন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রে ভোটারের আগমন বাড়তে থাকে এ কেন্দ্রেও। ভোট শেষে এ আসনের প্রার্থী এমএ লতিফ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তার আসনে ১৪২টি কেন্দ্রের মধ্যে কোনটিই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল না। ভোটার নম্বর পেতে বিড়ম্বনার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন। নির্বাচন নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আতঙ্ক না থাকলে ভোটের হার আরও অনেক বেশি হতো। 
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনেও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার রাতে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বোমাবাজি হলেও দিনটি অতিবাহিত হয়েছে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিল্পপতি দিদারুল আলম। রাজনীতিতে নতুন হলেও মনোনয়ন পেয়ে তিনি যথেষ্ট গণসংযোগ চালিয়েছেন। ফলে তার আসনের কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। সীতাকুন্ড থেকে জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড ইউনিয়নের মান্দারিটোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের চারপাশে উপর্যুপরি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তরা। সকাল ১১টায় জামায়াত-শিবিরের একদল দুর্বৃত্ত অতর্কিতভাবে এসে ভোটকেন্দ্রের চারপাশে অবস্থান নিয়ে এ হামলা চালায়। এ সময় তারা নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের পিকআপভ্যানে অগ্নিসংযোগ করে এবং ভোটকেন্দ্রের দিকে এলোপাতাড়ি ইট ও পাটকেল নিক্ষেপ করে। 
ফটিকছড়ি থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ভোটের শুরুতে কয়েকটি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও কোথাও ভোট স্থগিত করা হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরিবর্তে তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভা-ারিকে প্রার্থী দেয়ায় এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় ভোটের আমেজ ছিল কম।
পটিয়া থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, নির্বাচন শুরুর পাঁচ ঘণ্টা পর চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। প্রশাসনকে ব্যবহার করে অবাধে জাল ভোটসহ নানা অভিযোগ তুলে বেলা ৩টায় জাপা প্রার্থী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে তার সিদ্ধান্তের কথা জানান। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জাপা প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামসুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করেন। 
আনোয়ারা থেকে সংবাদদাতা জানান, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-পশ্চিম পটিয়া) আসনের ৯০ কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার আনোয়ারা ও পশ্চিম পটিয়ার ৫ ইউনিয়নের ৯০ কেন্দ্রে সকাল ৮টায় একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী তপন চক্রবর্ত্তী ও বিএনএফ মনোনীত প্রার্থী নারায়ণ রক্ষিত টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। বাঁশখালী থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, বাঁশখালীর ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও উপজেলা জামায়াতের আমিরের শেখেরখীল ইউনিয়নটি ছিল জামায়াত-শিবির ও বিএনপির দখলে। বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের ছবি ও ব্যানার ছিঁড়ে টাঙানো হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিসম্বলিত ব্যানার। ওই ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলেও ভোট দিতে দেয়নি ভোটারদের। পথে পথে বাধা, মারধর ও হুমকি দিয়ে কেন্দ্রেই যেতে দেয়নি কাউকে। প্রার্থীদের এজেন্টদেরও কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে ক্যাডাররা। 
সংবাদদাতা সাতকানিয়া থেকে জানান, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে শনিবার রাতে কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা ব্যালট ও অন্য সরঞ্জাম পুড়িয়ে দিলে আজিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছদাহা আদর্শ মহিলা মাদ্রাসা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়। হামলায় প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার নাজিম উদ্দিন ও পোলিং অফিসার সুচন্দা বড়ুয়াসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হয়। এ সময় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা ঢেমশা কেরানীহাট সড়কে গাছ ফেলে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। ছদাহা এলাকায় আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে মোঃ সোলায়মান নামে এক গাড়িচালক আহত হয়। লোহাগাড়া বড় হাতিয়া খন্দকারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিকেল ৪টার সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা করতে গেলে এনামুল হক লালু (১৭) নামের এক শিবিরকর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। তার বাড়ি উপজেলার বড় হাতিয়া হাজুরপাড়া এলাকায়। কেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার সময় পুলিশের গুলিতে এ শিবিরকর্মী ঘটনাস্থলে মারা যায়।
রংপুরে সহিংসতায় নিহত দুই ৫৬ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত ॥ স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, ব্যালট বাক্স ও পেপার ছিনতাই, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, হামলা, ভাংচুর ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়া সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে রংপুরে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনা সামাল দিতে জেলার পীরগাছায় পুলিশের গুলিতে মারা গেছে দুই জামায়াত কর্মী। গুলিবিদ্ধ হয়েছে আরও ৪ জন। গুলিবিদ্ধ ওই জামায়াত কর্মীদের গোপন স্থানে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া পীরগাছাসহ বিভিন্ন স্থানে গুলি, টিয়ারশেল, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন। নাশকতা এবং নিরাপত্তার অভাবে জেলার ৪শ' ৭১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টি কেন্দ্রের ফলাফল বন্ধ রাখা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকেই রবিবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ককটেল ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। জেলার তিনটি নির্বাচনী এলাকার সবগুলো আসনের কেন্দ্রে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। সবার মাঝেই ছিল উৎকণ্ঠা-আতঙ্ক। 
পীরগাছায় জামায়াত-শিবিরের সার্বিক এই নাশকতার ঘটনার পেছনে সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌস জাহানের উস্কানি এবং দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। নাশকতার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) আসনের পীরগাছায়। এলাকাবাসী গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন সূত্র জানায়, পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পীরগাছার এই নাশকতায় অংশ নেয়। গভীর রাতে পারুল ইউনিয়নের মেকুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ অন্য নির্বাচন কর্মীরা নির্বাচনের সামগ্রী নিয়ে অবস্থান করাকালে ভোর অনুমান ৩টার দিকে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় হাদিউজ্জামান হাদি নামের এক জামায়াত কর্মী ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গুলিবিদ্ধ হয় আরও ৫ জন। এদের মধ্যে মিরাজুল ইসলাম মেরাজ নামের একজনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর নামের আরেক জামায়াত কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ অপর তিনজনের নাম-পরিচয় জান যায়নি। পীরগাছার সাতদরগা বাজারে অবস্থিত অন্নদানগর ইউনিয়ন কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মীরা নির্বাচন সামগ্রী নিয়ে রাত কাটানোর সময় নির্বাচন বিরোধীরা সেখানে এসে নিবার্চন সামগ্রী ছিনিয়ে নেয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ অন্তত ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে। নির্বাচন বিরোধীরা উপজেলার কৈকুরি দাখিল মাদ্রাসা, পাওটানা বাজারসহ অন্তত শতাধিক কেন্দ্রে নাশকতা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। ফলে সকাল ৮টা থেকে নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে ভোটগ্রহণ শুরু করতে দেরি হয়। সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পীরগাছার ৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৫টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখেন। পরে পর্যায়ক্রমে সেসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও সবশেষ ৩৯টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখেন। শনিবার মধ্যরাতে নির্বাচন বিরোধীরা রংপুর সদরের মমিনপুরের একটি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে পুলিশের দুটি রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। নির্বাচন বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী আসন রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনের কয়েকটি কেন্দ্রের নির্বাচন সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে সেসবে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে জেলার তিনটি নির্বাচনী কেন্দ্রের বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখতে হয় কর্তৃপক্ষকে। সন্ধ্যায় রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ফরিদ আহম্মেদ জানান, নাশকতা এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে জেলার ৪৭১টি কেন্দ্রের মধ্যে মোট ৫৬টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে পীরগাছা উপজেলায় ৩৯টি, রংপুর সদরে ১০টি, কাউনিয়ায় ৫ এবং পীরগঞ্জে ২টি রয়েছে। 
নওগাঁয় সংঘর্ষে নিহত ১ ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ থেকে জানান, নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনের মান্দা উপজেলার চকদেবীরাম গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাঝে ভোট প্রদানে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাবুল হোসেন (২৮) নামে এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছে। নিহত বাবুল হোসেন উপজেলার চকদেবীরাম গ্রামের নজের আলী কারিগরের পুত্র। ঘটনায় দুই পুলিশসহ আরও অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এ ঘটনা ঘটে। থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহেল বাকি জানান, সকাল থেকেই স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা তীর-ধনুক, লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাধারণ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়ে আসছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছলে নেতাকর্মীরা পুলিশ ও র‌্যাবের ওপর হামলা চালায়। নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এসএমজির ১০ রাউন্ড ও শটগানের ২৩ রাউন্ড মোট ৩৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জেলা রিটার্নিং অফিসার ও নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোঃ এনামূল হক জানান, ঘটনার পর সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
রায়পুরে জামায়াতের তা-বে নিহত ১ ॥ সংবাদদাতা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, জেলার-১ আসনের রামগঞ্জ উপজেলা চ-িপুর ইউনিয়নের মাসিমপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়ে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শিবিরকর্মী মোঃ রুবেল হোসেন (২৬) মারা যান। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন শিবিরকর্মী মোঃ আনোয়ার হোসেন (২৬), যুবদল কর্মী মোঃ টিপু (২৫), সাইফুল ইসলাম সুমন (২৮) ও জামায়াত কর্মী মোঃ ইউছুফসহ ২ জন এবং আহত রায়পুর থানার এএসআই ফজলুর রহমানসহ ৭ পুলিশ সদস্য। এ সময় আ'লীগ নেতা মোঃ শাহজাহান, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ কামাল হোসেন ও জহির হোসেন নামে ৪ ব্যবসায়ীর দোকান লুট ও ব্যাপক ভাংচুর চালায় শিবির নেতাকর্মীরা। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর সদর, রামগঞ্জ উপজেলার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সতন্ত্র প্রার্থী আ'লীগ নেতা সফিকুল ইসলাম দুপুর ২টায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম ভুইয়া বলেন, মাছিমপুর কেন্দ্রে নিহত শিবিরকর্মীকে রায়পুর নিয়ে গেছে তাদের নেতারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র‌্যাব, সেনা, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শহর এবং প্রতিটি কেন্দ্রে অবস্থানে রয়েছে। 
গাইবান্ধায় পিকেটার পুলিশ সংঘর্ষ ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের দ্বিতীয় দিনে সান্তাহার থেকে লালমনিরহাটগামী পদ্মরাগ এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে পিকেটাররা ভাংচুর চালায়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ এবং এক পর্যায়ে শটগানের ১৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় জিআরপি থানার ওসি ছাইদুর রহমান, পুলিশ কনস্টেবল বাবুল চন্দ্র, ট্রেন যাত্রীসহ ১০ জন আহত হয়। 
দিনাজপুরে ২ শতাধিক ভোটকেন্দ্রে আগুন- আনসার সদস্যসহ ৪ জন নিহত ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, নির্বাচনী সহিংসতায় রবিবার দিনাজপুরে ৪ জন নিহত এবং ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯০ জন। ব্যাপক বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও গুলিবর্ষণের মধ্য দিয়ে দিনাজপুর জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় দিনাজপুর-২ আসন (বিরল-বোচাগঞ্জ) থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ইতোমধ্যেই বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। রবিবারের নির্বাচনে দিনাজপুরের ৬শ' ৭২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮৩টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ইউএনওরা জানান, দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৭টি উপজেলার এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। স্থগিত হওয়া কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে পার্বতীপুর উপজেলায় ২৫টি, চিরিরবন্দরে ২৩টি, খানসামায় ১৫টি, ঘোড়াঘাটে ১০টি, বীরগঞ্জে ৮টি, কাহারোল উপজেলায় ১টি এবং সদর উপজেলায় ১টি। থানসামা, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর, ঘোড়াঘাট, পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ ও সদর উপজেলার প্রায় ২শ'টি ভোটকেন্দ্রে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা ব্যাপক বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালায়। এর মধ্যে ৪৭টি ভোটকেন্দ্র শুরু থেকেই বন্ধ থাকে। ব্যাপক হামলা, বোমাবাজি ও ভাংচুরের কারণে দুপুর ২টার মধ্যে অবশিষ্ট ৩৬টি ভোটকেন্দ্র স্থগিত ঘোষণা করা হয়। 
রবিবার সকাল ৮টা থেকে দিনাজপুর জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তবে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। শহরের প্রায় সবটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। বিশেষ করে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তবে জেলার অন্য উপজেলায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলো প্রায়ই ছিল ফাঁকা। শনিবার রাত দেড়টার দিকে সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের নশিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ১৮ দলীয় জোট নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ভোটকেন্দ্র ভাংচুর ও ব্যালট পেপার লুটপাটের সময় পুলিশের গুলিতে বাবুল আকতার (২৬) নামে এক ব্যক্তি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পার্বতীপুর উপজেলার উত্তর সালন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায় ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। তারা আনসার বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার আব্দুল ওয়াহেদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। হামলায় সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুবল চন্দ্রসহ ৮ জন আহত হন। এই ঘটনার পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিত অন্য কর্মকর্তারা ভোটকেন্দ্র থেকে পালিয়ে যান। দুপুর ১২টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলার মন্মথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে হামলার সময় রায়হান মাসুদ (৩০) নামে যুব জাগপার এক কর্মী বিজিপির গুলিতে নিহত হন। একই সময় পার্বতীপুর উপজেলার ঘোড়াখাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে তোফাজ্জল হোসেন চুন্নু নামে (২০) নামে এক যুবদল কর্মী নিহত হন। এ সময় মফিজুল ও হাসান নামে আরও ২ যুবদল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। শনিবার রাতে ১৮ দলীয় জোট নেতাকর্মীরা খানসামা উপজেলার ৪৭টি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায়। তারা ভাংচুর ও লুটপাট করে ওসব ভোটকেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। 
দিনাজপুর-৬ আসন থেকে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ালেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি প্রার্থী রবীন্দ্র নাথ সরেন। রবিবার বিকেলে নির্বাচন শেষ হওয়ার মাত্র ১ ঘণ্টা আগে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। যৌথবাহিনীর গুলিতে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলা যুব জাগপার সহসম্পাদক মোঃ রায়হান মাসুদ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সোমবার হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। রবিবার জেলা কমিটির এক সভায় সোমবার পার্বতীপুর উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা এবং দিনাজপুরে অর্ধদিবস হরতাল পালনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। 
ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত-৪ ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, সকাল থেকেই বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনবিরোধীরা হামলা চালায়। তারা ভোট কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ভাংচুর, ছিনতাই ও তছনছ করে। সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিএনপি কর্মী জয়নাল আবেদীন (২৫) ও হারুন অর রশিদ (৩৫) পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে মারা যায় এবং গড়েয়া গোপালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আবু হানিফ (৪৩) নামে এক ব্যক্তি মারা যায়। এর আগে সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ছেপড়িকুড়া ভোট কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার জবায়দুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
নির্বাচনবিরোধীরা বাসুদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১টার দিকে হামলা চালালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে হারুন ও জয়নাল নামে ২ বিএনপিকর্মী নিহত হয়। তাদের মধ্যে জয়নালের মৃতদেহ সদর হাসপাতালে আনা হলেও হারুনের মৃতদেহ তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া সদর উপজেলার গড়েয়া গোপালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনবিরোধী ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হলে বিএনপিকর্মী আবু হানিফ প্রতিপক্ষের তীরের আঘাতে গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে আনার পর তিনি মারা যান।
শনিবার রাত ৮টার দিকে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের ৬টি ভোট কেন্দ্রে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা সদর উপজেলার ভেলাজান আনছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার কুতুব উদ্দীনকে পিটিয়ে আহত করে। এর কিছুক্ষণ পর হামলাকারীদের পেট্রোল বোমার আগুনে আরাজি ঝাড়গাঁও রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার রেজাউল করিম অগ্নিদগ্ধ হয়। এতে তাঁর শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে যায়। 
সুন্দরগঞ্জে জামায়াতকর্মীর মৃত্যু- প্রিসাইডিং অফিসার নিখোঁজ ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা এনএম উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা হামলা চালায় ও ভাংচুর করে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে সেখানে জামায়াত-শিবিরের ২২ নেতাকর্মী আহত হয়। এর মধ্যে ওই উপজেলার মনমথ শিমুলতলী গ্রামের জামায়াত শাহাবুল ইসলাম তারা (৩৫) গুরুতর আহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। নিজপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মাসুদুর রহমান ইউএনও অফিস থেকে নির্বাচন সামগ্রী নিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দিলে তিনি উক্ত কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি। এ খবর লেখা পর্যন্ত সে নিখোঁজ রয়েছে এবং ওই কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানা গেছে। 
লক্ষ্মীপুরে নিহত-১॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা হামলা চালাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মোঃ রুবেল হোসেন (২৬) নামের এক শিবিরকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত রুবেল চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার চর-মান্দারী এলাকার মৃত বসির উল্যার পুত্র। এ সময় যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম সুমন, যুবদলকর্মী টিপু, শিবিরকর্মী আনোয়ার হোসেন গুলিবিদ্ধ, পুলিশের এসআই ফরহাদ হোসেন, কনস্টেবল ফয়েজ ও মাইক্রোবাসচালক মোঃ হোসেন আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। 
সকালে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনের ৮টি ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ও ব্যালট বক্স ছিনতাই করে অগ্নিসংযোগ করেছে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা দুটি পিকআপ ভ্যানে অগ্নিসংযোগ করে। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) ও লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে সন্ত্রাসীদের হামলা, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও অগ্নিসংযোগের কারণে ৭টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলো হলো, রামগঞ্জের পানিওয়ালা কেন্দ্র, কাশেমনগর, সুন্দুরা, কালিকাপুর, উত্তর হরিশ্চর, ননীয়া পাড়া এবং কমলনগর উপজেলার পশ্চিম চরলরেঞ্চ দাখিল মাদ্রাসা। সকাল থেকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। 
সোনাগাজীতে পুলিশের গুলিতে ২ যুবদলকর্মী নিহত ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ফেনীর সোনাগাজীতে রবিবার ভোটগ্রহণ চলাকালে উত্তর চর চান্দিয়া বড়বাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোটবিরোধীরা হামলা চালায়। এ সময় নিক্ষিপ্ত ককটেলে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। আহতদের ফেনী সদর হাসপাতালে আনার পথে যুবদলকর্মী জামশেদ (২৩) ও হাসপাতালে আনার পর শহিদ উল্লা (২০) মারা যায়। এ ছাড়া সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এলাকার নারী-পুরুষ সম্মিলিতভাবে হামলা চালায়। ঘটনার পরপর র‌্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালায়। দিনভর বিক্ষিপ্ত হামলা, ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনার মধ্য দিয়ে ফেনী-৩ আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়। সোনাগাজীর মহেশপুর কেন্দ্রে ১৬৫০ ভোটের মধ্যে ১ ভোটও কাস্ট হয়নি। সব কেন্দ্রে মহিলা ভোটাররা ছিল অনুপস্থিত। ৭০-৮০ কেন্দ্রে ৩০-৪০ ভোট কাস্ট হয়েছে ভোটের সময় বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ফেনী-৩ আসনে ১২২টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে শনিবার রাতে চরদরবেশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার লুট হয়ে যাওয়ায় এ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
নীলফামারীতে জামায়াতকর্মী নিহত ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, নীলফামারী ১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের ভোট কেন্দ্রে লুট করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) নামে জামায়াতের এক কর্মী নিহত হয়েছে। রবিবার রাত দুইটার দিকে ওই আসনের ডিমলা উপজেলার খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ব্যাপারীতলা আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে ওই ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া দুর্বৃত্তকর্তৃক ভোট কেন্দ্রে হামলা ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার কারণে নীলফামারী-১, নীলফামারী-৩ আসনের মোট ৯টি ভোট কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। নীলফামারী জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার জাকির হোসেন জানান, ১৮ দলীয় জোটের হ�
প্রকাশ : সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৪, ২৩ পৌষ ১৪২



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___