চট্টগ্রাম, ফেব্র"য়ারি ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- হাটহাজারীর নন্দীরহাটে মন্দির ভাংচুরের পর স্থানীয় মসজিদের দেয়াল ভেঙে গুজব রটিয়ে হিন্দুদের ধর্মীয় স্থাপনা, বাড়ি ও দোকানে হামলা চালাতে উস্কানি দেওয়া হয় বলে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
গত ৯ ফেব্র"য়ারির এই ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া মো. জসিম পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি মসজিদের দেয়াল ভাঙার কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের হাটহাজারী সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী সুপার বাবুল আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নন্দীরহাটের ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তা করা হয়েছে, যা প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
"মসজিদের দেয়াল ভাঙার সঙ্গে জসিম নামে একজন রাজমিস্ত্রীর যুক্ত থাকার সংবাদ পেয়ে হাজীপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার এবং তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে লোকমান ও এমদাদসহ বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়," বলেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ৫০ টাকার বিনিময়ে হাজীপাড়া মসজিদের দেয়ালের একাংশ ভাঙার কথা জসিম তার জবানবন্দিতে স্বীকার করেছে। হাজীপাড়ার মো. এমদাদ উল্লাহ ও মো. লোকমান তাকে এ কাজে বাধ্য করেছে বলে সে জানায়।
লোকমান হাজীপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং এমদাদ বিএনপির সমর্থক বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
গত ৯ ফেব্র"য়ারি নন্দীরহাটে লোকনাথ সেবাশ্রমের বার্ষিক উৎসবের শোভাযাত্রা স্থানীয় একটি মসজিদ অতিক্রমের সময় দুই ধর্মের কয়েকজন মানুষের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর এক দফা মন্দির ভাংচুর হয়। রাতে হিন্দুরা মসজিদের দেয়াল ভাংচুর করেছে- এই গুজব রটিয়ে পরদিন ভাংচুর ও লুটপাট হয় পাঁচটি মন্দির এবং কয়েকটি বাড়ি ও দোকানে।
পুলিশ জানায়, মন্দিরে ভাংচুরের আগে হাজী পাড়া মসজিদে দুই পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে লোকমান ও এমদাদ ছিলেন। সভা চলাকালীন লোকমান ও এমদাদের কিছু সমর্থক বাইরের কিছু লোককে নিয়ে মন্দির ভাংচুর করে।
এর পেছনে কারা ইন্ধনদাতা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানায়। জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের ইন্ধন রয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করে আসছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল বলেন, এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমসি/এমআই/২০১৭ ঘ.