Banner Advertiser

Monday, December 30, 2013

[mukto-mona] জেল হত্যাকাণ্ড ॥ আবদুস সামাদ আজাদের সাক্ষাতকার -৩



সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৬ পৌষ ১৪২
জেল হত্যাকাণ্ড ॥ আবদুস সামাদ আজাদের সাক্ষাতকার
শারমিন আহমদ
(পূর্ব প্রকাশের পর)
ময়েজউদ্দীন আহমেদ [এমপি] সাহেব ছিলেন রেডক্রসের সঙ্গে কানেকটেড। আমি রাতেই-আমার যে চ্যানেল ছিল-[গার্ডের মাধ্যমে খবর] পাঠাবার মতো যে চ্যানেল করেছিলাম- সে আসবে কিনা [কিন্তু] ও এসেছে। আসার পর, রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে আমার ঘুম ভাঙল। রাত দুইটা কি আড়াইটায় ঘুম ভাঙল। [রাত] একটায় ঘুমালেও দুইটা কি আড়াইটায় ঘুম ভাঙত। আমার জানালার সামনে আমাদের জেলখানার জানালার কাছাকাছি তারা আসত।
শারমিন আহমদ- কারা?
আব্দুস সামাদ আজাদ- ঐ ডিউটি যারা করত। আমাদের জেলখানার সামনে একটা বারান্দা ছিল-
শারমিন আহমদ- সে জন্য তারা [ঘরের দরজার সামনে] আসতে পারত না?
আব্দুস সামাদ আজাদ- সে জন্য একটা ডাবল লকআপ হয়ে যেত। আমাদের রুমটা লকআপ হতো। বারান্দাটাও লকআপ হতো। [বারান্দার গেট] সুতরাং বারান্দার ঐ দিক থেকে কথা বলত। কোন জিনিস পাস করতে অসুবিধা হয়। কোন একটা চিঠি দিতে হলে ঢিল দিত। কিন্তু বারান্দা থেকে যদি সেটা পড়ে যায়- আমি তো সেটা রিসিভ করতে পারছি না।
শারমিন আহমদ- কারা দিত আপনাকে চিঠিপত্র? 
আব্দুস সামাদ আজাদ- [অস্পষ্ট] সরকারের লোক– জেলখানার নিয়মেই আমরা [চ্যানেল] করে ফেলি। যারা জেলটেল খাটি আমরা খবরটবর দেবার [অস্পষ্ট] [চ্যানেল তৈরি করেন]
শারমিন আহমদ- কিন্তু আপানারা খবর দিতে পারতেন না বারান্দাটার জন্য?
আব্দুস সামাদ আজাদ- রাতে এই অসুবিধা হতো।
শারমিন আহমদ- জেলখানার বারান্দার মধ্যে লকআপ ছিল? 
আব্দুস সামাদ আজাদ- হ্যাঁ লকআপ ছিল। ডাবল ব্যারিয়ার। দূর থেকে দিতে হতো ঢিল দিয়ে। যদি আমি রিসিভ করতে না পারি তাহলে সকালে [অন্য গার্ডরা] এসেই যদি পেয়ে যায় তাহলে ধরা খেয়ে যাব। সে জন্য সাবধান থাকতে হতো। তো বারান্দার ওখানে নামাজ পড়ছি, তখন সে লোকটা [নাইট গার্ড] আসলো। যে লোকটা আমার চিঠি নেয়। তো সে আসছে। আমি বললাম যে আমার একটা চিঠি [আছে]। সেই লোকটা মসজিদে নামাজে যেত। ইমাম সাহেবের কাছে [চিঠি] দিয়ে আসত। ইমাম সাহেব আবার বাসায় পৌঁছে দিত। এটা [চ্যানেল] এসটাব্লিশ করতে সময় লাগে। আমি গিয়েই করেছি। সেজন্যই তাজউদ্দীন সাহেব জানতেন যে আমি পারব। তো আমি একটা চিঠি [জানালা পথে] ময়েজউদ্দীনের কাছে পাঠালাম। আমি লিখে পাঠালাম যে, 'জেলের পরিস্থিতিটা ভাল লাগছে না। অতি সত্ব¡র চিঠি পাওয়া মাত্র তুমি জেলখানাটাকে রেডক্রসের আওতায় আনা যায় কিনা সেটার একটা চেষ্টা কর।' তখন তো কোন আইন নেই, কানুন নেই। আর্মি এটার মধ্যে নেই। তারা ক্যান্টনমেন্টে। আর এই লোকগুলো বঙ্গভবন দখল করে বসে আছে- ট্যাংক কয়েকটা নিয়ে। আর ক্যান্টনমেন্টে যারা আছে তারা তো আরেক কমান্ডে। তাদের কমা তো এদের ওপর নেই। এদের কমান্ড আবার ওদের ওপর নাই। [দল ছুট জুনিয়র আর্মি ও মোশ্তাক চক্র বঙ্গভবনে।] এই ছিল একটা অবস্থা। এই অবস্থায় তারা যে কোন জিনিস পাগলামি করে করে ফেলতে পারে। মেরে ফেলতে পারে। এই যে একটা চিন্তা-পরিস্থিতি যে নেক্সট কোন গবর্মেন্ট হবার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে [স্বীকৃত] যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের পিলার-তাদের এই কারণে এলিমিনেট করে দিতে পারে। এই যে একটা মনোভাব- এটা খুব ইনফরমেশন ভিত্তিক না- এটা একটা গেস ওয়ার্ক। তো আমি ১ তারিখ রাতে ওকে পেলাম। আমার চ্যানেল এসে গিয়েছে ডিউটিতে, তাকে [চিঠি] দিয়ে দিলাম। সে বলল, 'স্যার কাল আমি নামাজে যাব।' তাকে তো বলতে হয় না। এর আগেও নিয়ে গিয়েছে। উত্তরও এসেছে।
শারমিন আহমদ - সেটা কি ২ তারিখ রাতে না ১ তারিখ রাতে?
আব্দুস সামাদ আজাদ- ১ তারিখ রাতে। তারপর ২ তারিখ গেল। দুই তারিখ নবেম্বরের। একজাক্ট অবস্থাটা তোমাকে বলি। আমাদের যে বিল্ডিংটা, এরপরে কিচেন তারপরে আরেকটা এরিয়া আছে যেখানে বেশিরভাগ আমাদের লোক [রাজবন্দী] থাকত। সেই জায়গায় আরেকটা দিক আছে-[অস্পষ্ট] তার ডান দিকে ডেপুটি সুপারিনটেন্ডের বাড়ি ছিল। এই আমাদের এলাকায়। তো বাড়িটা এরিয়ার সঙ্গে সঙ্গে তো। তো জানালাগুলো বন্ধ রাখত। যাতে ওখান থেকে কেউ কথা না বলতে পারে। পাকা রাস্তা আছে। পাকা রাস্তা আমরা করেছিলাম [অস্পষ্ট] হাতে। ওখানে ছায়া আছে। ওখানে টেবিল চেয়ার নিয়ে বিকেল বেলা তাজউদ্দীন সাহেব খুব নিরিবিলিতে কি লিখছেন। ঐ ডায়েরি লিখছেন। খুব একবারে নিবিষ্ট মনে, একটা কথার জবাব একবারে দিচ্ছেন। পাল্টা যে আরও কিছু কথা কওয়া- বলছেন না।
শারমিন আহমদ- কোথায় লিখছেন? ঐ ছায়াতে বসে?
আব্দুস সামাদ আজাদ- ছায়া আছে গাছের। ছায়া পড়ে না বিকেলে- ওখানে একটা টেবিল-চেয়ার পেতে-ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল তো... সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন- উনি সব লিখে গিয়েছিলেন।
আব্দুস সামাদ আজাদ- ডায়েরিটা পরে পেলাম না।
শারমিন আহমদ- অনেকে বলে এটা কোরবান আলীর কাছে...[ পরবর্তী সাক্ষাতকারদাতা মহসীন বুলবুল কনফার্ম করেন যে তাজউদ্দীন আহমদের ঐতিহাসিক ডায়েরিটি কোরবান আলী নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন।] 
আব্দুস সামাদ আজাদ- ঐ ডায়েরিটা ঐ রুমে যারা ছিলÑ কোরবান আলী এদের আমরা বললাম, ডায়েরিটা দাও। ড. আসহাবুল হক উনিও ছিলেন।
শারমিন আহমদ- কে-না প্রথম বললেন যে, কোরবান আলী নিয়ে গিয়েছেন।
আব্দুস সামাদ আজাদ- আসহাবুল হক, মাখন [পরের বাক্য অস্পষ্ট] -তারপর আমি বললাম, তাজউদ্দীন সাহেব উঠতে হবে। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। লকআপ হয়ে যাবে। মাগরেবের আজান পড়লেই লকআপ হয়ে যায়। বারান্দার দরজা ও তিন রুমের সামনের লোহার শিকওয়ালা চারটি দরজা তালা চাবি দিয়ে লকআপ করা হতো। 
শারমিন আহমদ- গেট লকআপ হয়ে যায়?
আব্দুস সামাদ আজাদ- আমাদের ঘরের বাইরের দিকে লকআপ করে রাখে। জেলের ভেতর আমরা যে থাকিÑ ভেতর দিকে লকআপ হয় না। বাইরের দিকে তালা মেরে আমাদের ভেতরে রেখে দেবে। আবার সকালে খুলবে। না খুললে আমরা বের হতে পারব না। তো সাধারণ কয়েদীদের এক নিয়ম। আমাদের আরেক নিয়ম। আমাদের ভোরবেলায় খুলে দিত কারণ আমাদের বেড়াতে হবে, নামাজ পড়তে হবে। পলিটিক্যালি আদায় করে নিতে হয় আরকি। তো আমাদের একটা কমিটি হয়েছিল। জেলখানায় আমাদের থাকাটাকা, কি করে উন্নতি হবে সংক্রান্ত বিষয়ে একটা কমিটি। আর আমরা পাঁচজন মিলে আরেকটা কমিটি। আমি, নজরুল সাহেব, তাজউদ্দীন সাহেব, মনসুর আলী সাহেব, কামরুজ্জামান সাহেবÑ আমরা পাঁচজন মিলে একটা একক্সিউটিভ কমিটি ফর্ম করি, যাতে আরও পষড়ংবষু আলাপ করতে পারি। সকলে আমার রুমে গিয়ে বসতেন। তো তাজউদ্দীন সাহেব তো খুব আইন মানা লোক ছিলেন। যারা বাইরে গিয়ে আলাপ করতেন, বলতেন একজন আলাপ করবে, সামাদ সাহেব আলাপ করবে। চৌদ্দ জনের আরেকটা কমিটি হয় আসাদুজ্জামান, রশীদ সরদার, এস.পি মাহবুব [সহ]।
শারমিন আহমদ- কোন আসাদুজ্জামান?
আব্দুস সামাদ আজাদ- সেক্রেটারি ছিলেন গবর্মেন্টে। এখনও আছেন চাকরিতে। জেল থেকে বের হয়ে চাকরিতে গিয়েছেন আরকি। এনারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ছিলেন-এনাদেরও আমাদের লোক মনে করে জেলে দিয়েছে আরকি। যাই হোক, আমরা বসতাম, আলোচনা করতাম। ঐদিন [২ নবেম্বর বিকালে] আমি ডাকলাম, বললাম 'শুনেন লকআপ তো হয়ে যাবে-আমরা একটু বেড়াই।' আমরা তারপর হাঁটলাম। বললাম, 'ইন্টারভিউতে ভাবি এসেছিলেন কিনা'- তোমার আম্মার কথা। বললেন 'আমার ইন্টারভিউটা আসতে দেরি হবে কারণ ক'দিন আগে ইন্টারভিউ হয়েছে।'
শারমিন আহমদ- দোসরা নবেম্বর আপনার সঙ্গে আব্বুর ইন্টারভিউ ছিল তাইনা আম্মা?
সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন- ফার্স্ট নবেম্বর। 
আব্দুস সামাদ আজাদ- সেদিন হয়েছিল- এই আমার মনে পড়েছে। [তাজউদ্দীন আহমদ ১ নবেম্বর ওনার স্ত্রীর সঙ্গে ইন্টারভিউয়ের কথা বলেছিলেন যা বেগম তাজউদ্দীনের কথায় আব্দুস সামাদ আজাদের মনে পড়ে] ঐ ইন্টারভিউ নিয়ে আলাপ করছিলাম- ২ তারিখ হলো। ইনফরমেশন এক্সচেঞ্জ হচ্ছে আরকি। উনি একটা চিঠি দিয়েছিলেন ভাবির মাধ্যমে মানিক চৌধুরীর [এম.পি] কাছে। বললাম, কাজ টাজ বাইরে করার প্রশ্ন উঠছে। পার্লামেন্টে মেম্বারদের ডাকবে। ওরা প্রেশার দিচ্ছে ডাকবার জন্য। 
শারমিন আহমদ- কারা?
আব্দুস সামাদ আজাদ- বাইরে পার্লামেন্টে। মানিক চৌধুরী ছিল, ময়েজউদ্দীন ছিল মোশতাকের বিপক্ষে]। আর কিছু লোক ছিল-ইউসুফ আলী, সোহরাব হোসেন [পক্ষে] ওরা উল্টা মেম্বারদের বোঝাচ্ছে- যা হবার হয়ে গিয়েছে-এভাবে বাইরের খবরগুলো পেতাম। পার্লামেন্টের সদস্যদের মধ্যে, মোশ্তাক যে ডাকবে শিউর হতে পারছেন না। পার্লামেন্ট নিয়মিত হবে কি না- সদস্যরা যারা আছে এই নিয়ে একটা লবি হচ্ছে। সেই লবির খবরটা আমরা পেয়েছি। মানিক চৌধুরী আমাদের পক্ষে [মোশ্তাকের পার্লামেন্টকে বর্জনের পক্ষে আওয়ামী লীগের এক অংশের তৎপরতা] আর ইউসুফ আলী, সোহরাব হোসেন ওনারা তো মন্ত্রীই আছেন [প্রথমে বঙ্গবন্ধুর সরকারে তারপর মোশ্তাকের সরকারে]। ওনারা মেম্বারদের অন্যভাবে বোঝাচ্ছে যাতে মোশ্তাককে মেনে নিয়ে একটা পার্টি বিলডআপ করা যায়। সেই লাইনে [কথাবার্তা চলছে]। এইসব খবর আমরা পেয়েছি। এসব আলাপ-টালাপ করে রাতে লকআপে চলে গিয়েছি। যার যার রুমে চলে গিয়েছি। গার্ড আসছে চাবি নিয়ে। একটা রুমে তালা মারে তারপর আরেকটা রুমে। লাস্টে আমাদের রুমে তালা মারে। আমাদের রুমে প্রায় পঁচিশজন ছিল। আমাদের রুম বড় তো। জোহা সাহেব [সামসুজজোহা এম.পি], আতিউর রহমান, তারপর আমু [আমির হোসেন আমু] ছিল, সৈয়দ হোসেন- ঐ সময়টায় প্রায় পঁচিশ-তিরিশজন ছিল। রাতে এক সঙ্গে নামাজ পড়তাম। এক সঙ্গে খেতাম। যার সঙ্গে যার খাতির আছে তার সিটে গিয়ে গল্পসল্প করতাম। রাতে ঐযে আমার অভ্যাস ছিল ঠিক সবাই ঘুমিয়ে গেলে লাইট অফ করে দিতাম। টেবিলে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে যাতে কারও অসুবিধা না হয়, আমি ইয়াসিন সূরা পড়তাম। ইয়াসিন সূরা পড়ে আমি ঘুমাতাম। আমার পাশে মনসুর আলী সাহেব ছিলেন। তার পরের সিটটায় ছিলেন সৈয়দ হোসেন সাহেব। তারপর অন্যরা। আমি কোরান শরীফ পড়ছি। উনি আমার পাশের সিটটা থেকে উঠে, উনি কাছে এসে উপুড় হয়ে আস্তে আস্তে বললেন, 'সামাদ সাহেব পাঠিয়েছেন?' [সামাদ সাহেব মনসুর আলীর উদ্বিগ্ন গলার অনুকরণে বললেন] 
শারমিন আহমদ- কোন্্টা?
আব্দুস সামাদ আজাদ- জিজ্ঞেস করলেন রেডক্রসে [খবর] পাঠাতে পেরেছিলেন? আমি ওনাকে সাহস দিলাম। উনি বললেন 'আমার জানি কেমন মনে হচ্ছে।' এই স্বাভাবিক আলাপ কিন্তু উনি একটু অয়ারিড। আমি বললাম 'আল্লাহ, আল্লাহ করেন। আমাদের তো আর করার কিছু নেই।' এরপরে আমি ঘুমিয়েছি। তারপর ঐযে বললাম তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে ঠিক রাত আড়াইটার সময় আমার ঘুম ভাঙ্গে। ঘুম থেকে উঠে আমি তাহাজ্জুদ পড়ছি। লাইট-টাইট না জ্বালিয়ে। শুধু বাইরের লাইটে। রাতের ডিউটি হলো রাত ১১টা, তারপর ১টা। দুই ঘণ্টা পর পর চেঞ্জ হয়। একদল যায় আরেক দল আসে। তারপর আবার ৩টায় চেঞ্জ হয়। এ সময় আমি আড়াইটার নামাজ পড়ে বসে আছি। 
শারমিন আহমদ- আবার ৩টায় চেঞ্জ হয়।
আব্দুস সামাদ আজাদ- রাতের ডিউটি হলো ২ ঘণ্টা পরপর। দিনের ডিউটি হোল ৬ ঘণ্টা পরপর। সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন- আপনি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে বসলেন- 
আব্দুস সামাদ আজাদ- ঐ ডিউটিতে আসবে সিপাই, যার যার ওয়ার্ডে ডিউটি আছে না- এই ডিউটি সেই ডিউটি। ৩টার সময় একটা চেঞ্জ হয়। অন্য লোক না আসা পর্যন্ত এরা যাবে না। তার পর নতুনরা আসার পর যারা যাবার তারা গিয়েছে এবং যারা আসবার তারা এসেছে। 
সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন- পাগলা ঘণ্টি বাজল না?
আব্দুস সামাদ আজাদ- আরও পরে। আমরা তো তখনও জানি না কি হবে। আমি নর্মালি জিজ্ঞেস করছি [ডিউটিরত গার্ডকে] কি কেমন আছেন – ঐ যে লোকটা আমার চিঠিপত্র [আদান প্রদান করত] 
শারমিন আহমদ- সে তখন ডিউটিতে এসেছে?
আব্দুস সামাদ আজাদ- হ্যাঁ। ঐ সপ্তাহ হয়ত ডিউটি করবে। সে আমাকে বলল 'কেমন আছেন?' আমি বললাম 'ইমাম সাহেব কেমন আছেন?' সে ইমামতি করত। সে বলল, 'ভাল আছি।' এর মধ্যেই শুনি হুইসেল বাজছে। বললাম, 'কি হলো হুইসেল বাজে কেন?' তখন সে বলল, আমরা যখন আসি তখন আইজি এসেছিল।' জেনারেলি আইজির অত রাতে আসার কথা না!
শারমিন আহমদ- ডিআইজি প্রিজন্স না আইজি?
আব্দুস সামাদ আজাদ- আইজি [প্রিজন্স] ওরা বলল যে 'স্যার জেলখানার অন্য অফিসারদেরও দেখলাম।' তারা তো ডিউটিতে আসে যায় তারা তো অত বোঝেনি। ভাবলাম কয়েদী- টয়েদী পালালে যেরকম ঘটনা হয় তেমন হবে আরকি। সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন- আপনারা ওটাই আন্দাজ করছিলেন?
আব্দুস সামাদ আজাদ- আমরা তো আর বুঝলাম না। তারপর সমস্ত জেলখানায় হুইসেল-পাগলা ঘণ্টা বাজছে। এই হলো কয়েক মিনিটের প্রস্তুতি। এর মধ্যেই দেখি বারান্দার যে জায়গাটা সেকেন্ড গেট মানে ফার্স্ট লকআপ বলে যাকে দেখি ১ নম্বর রুমের কোরবান আলী, শেখ আব্দুল আজীজ, মাখন, ড. আসহাবুল হক [৩ নম্বর রুমে ঢুকছেন]
শারমিন আহমদ- বারান্দার ফার্স্ট লকআপটা খুলে?
আব্দুস সামাদ আজাদÑ রুমে ঢুকতে তো একটা বারান্দা থাকে। তারা তো ওয়ারিড অবস্থা। বললেন কি ব্যাপার বুঝতে পারছি না। আমাদের তো এখানে নিয়ে এসেছে।
শারমিন আহমদ- ফার্স্ট লকআপ খুলে তাঁদেরকে আপনার ঘরে নিয়ে আসে?
আব্দুস সামাদ আজাদ- আমাদের যে রুমটা সেটা তো একটা বিল্ডিংয়ের মতো। ওদিকে কি হচ্ছে আমরা তো আর কিছু জানি না। আমরা তো রুমের ভেতরে। বারান্দা আছে রেলিং আছে।
(চলবে)
লেখক : তাজউদ্দীন আহমদের বড় মেয়ে ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী গবেষক

জেল হত্যাকাণ্ড ॥ আবদুস সামাদ আজাদের সাক্ষাতকার - 
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩, ৯ পৌষ ১৪২০

জেল হত্যাকাণ্ড ॥ আবদুস সামাদ আজাদের সাক্ষাতকার -২
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩, ১০ পৌষ ১৪২


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___